31 C
Dhaka
মার্চ ২৮, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম

ফেরেশতাদের সঙ্গে মানুষের বিস্ময়কর সাক্ষাৎ

ফেরেশতা আল্লাহর বিস্ময়কর এক সৃষ্টি। আল্লাহ সৃষ্টিজগতে নানা কাজে ফেরেশতাদের নিয়োজিত করেছেন। পবিত্র কোরআনে তাঁদের আল্লাহর বিশেষ বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহর বাণী ও নির্দেশনা তাঁর প্রেরিত পুরুষ নবী-রাসুলদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করেন ফেরেশতারা। সে হিসেবে নবী-রাসুলদের সঙ্গে ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু নবী না হয়েও অনেকেই ফেরেশতার সাক্ষাৎ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে যেমন পুণ্যবান মানুষ রয়েছে, তেমনি রয়েছে পাপিষ্ঠরাও। যেমন—সারা, মারিয়াম, মুসা (আ.)-এর মা ও লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের লোকেরা। এ ছাড়া মৃত্যুর সময় প্রত্যেক মানুষ মৃত্যুর ফেরেশতাকে দেখতে পায়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা বলে আল্লাহ আমাদের প্রভু; অতঃপর তারা অটল থাকে। তাদের কাছে (মৃত্যুর সময়) ফেরেশতা এসে বলে, তোমরা ভয় পেয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো—যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেওয়া হয়েছিল।’ (সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩০)

পাপীদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘যেদিন (মৃত্যুর সময়) তারা ফেরেশতাদের দেখবে, (সেদিন বলা হবে) আজ অপরাধীদের জন্য কোনো সুসংবাদ নেই।’ (সুরা : ফোরকান, আয়াত : ২২)

মানুষের চোখে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব?
মানুষের পক্ষে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব। যা কোরআনের আয়াত ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে ধর্মতাত্ত্বিক আলেমদের মতে, ফেরেশতাদের নিজস্ব আকৃতিতে দেখা সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, ফেরেশতারা আল্লাহর নূর বা জ্যোতি দ্বারা সৃষ্ট, যা মানুষের চোখ সহ্য করার ক্ষমতা রাখে না। মুসা (আ.) আল্লাহর নূর দেখে অচেতন হয়ে যান। ইরশাদ হয়েছে, ‘সে বলল, হে আমার প্রভু! আমাকে দর্শন দাও, আমি আপনাকে দেখব। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনোই দেখতে পারবে না। বরং তুমি পাহাড়ের প্রতি লক্ষ করো, যদি তা নিজ স্থানে স্থির থাকে, তবে তুমি আমাকে দেখতে পারবে। যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ে জ্যোতি প্রকাশ করলেন, তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করল এবং মুসা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেল।…’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৪৩)

এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, মানবচোখে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব নয়। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিবরাঈল (আ.)-কে একাধিকবার আপন আকৃতিতে দেখেন। প্রথমবার দেখার পর তিনিও ভয় পান। হাদিসের বর্ণনায়, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তা নিয়ে এমন অবস্থায় ফিরে এলেন যে তাঁর হৃত্স্পন্দন বেড়ে গেল। তিনি খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমাকে চাদর আবৃত করো, আমাকে চাদর আবৃত করো। তিনি তাঁকে চাদর আবৃত করলেন। যাতে তাঁর ভয় দূর হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩)

তবে আল্লাহ কখনো কখনো মানুষকে শেখানোর জন্য, তাদের পরীক্ষা করার জন্য মানুষরূপে ফেরেশতা পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে নবী (আ.) ছাড়া যারা ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ পেয়েছে, মানুষরূপেই পেয়েছে। সহিহ বুখারি ও মুসলিমের হাদিসে সাহাবিদের উপস্থিতিতে রাসুল (সা.)-এর কাছে জিবরাঈল (আ.)-এর আগমনের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি যাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘ইনি জিবরাঈল। তিনি তোমাদের দ্বিন শেখাতে এসেছিলেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২)

স্বপ্নে ফেরেশতার সাক্ষাৎ

মানুষের আকৃতিতে মানুষের যেমন ফেরেশতার সাক্ষাৎ পাওয়া সম্ভব, তেমনি স্বপ্নেও ফেরেশতার সাক্ষাৎ পাওয়া সম্ভব। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম দুজন ফেরেশতা আমাকে ধরে জাহান্নামের দিকে নিয়ে গেল। সেটি ছিল একটি কূপের মতো ভাঁজ করা (গর্ত) এবং কূপের মতো তাতে দুটি স্তম্ভ ছিল। তার ভেতর মানুষ ছিল। আমি তাদের চিনতে পারি। আমি বলতে শুরু করি—‘আমি আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাই’, ‘আমি আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাই’। ফেরেশতাদ্বয় অপর এক ফেরেশতার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আমাকে বলেন, ভয় পেয়ো না। আমি এই স্বপ্ন হাফসা (রা.)-কে বলি। তিনি রাসুল (সা.)-কে তা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ কতই না ভালো মানুষ, যদি সে রাতে নামাজ (তাহাজ্জুদ) পড়ত!’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৭৯)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, স্বপ্নে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব।

বর্তমান যুগে ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ সম্ভব?

বর্তমান সময়েও ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ লাভ সম্ভব। তবে ফকিহ আলেমরা একমত যে নবীদের পরে কোনো ব্যক্তি ফেরেশতা দেখার অকাট্য দাবি করতে পারবে না। কেননা তাঁরাই ছিলেন ফেরেশতাদের সত্যায়নকারী। যেহেতু মুহাম্মদ (সা.)-এর পর আর কোনো নবী আসবেন না, তাই এখন কেউ দাবি করতে পারবে না আমি ফেরেশতার দেখা পেয়েছি। করলে সে মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হবে। (শায়খ আবদুল্লাহ ইবনে বাজ, ফাতাওয়া আল জামি আল কাবির, ফাতাওয়া : ৩৪৬৬)

ফেরেশতার সাক্ষাতের জন্য মুমিন হওয়া শর্ত?

ফেরেশতার সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য মুমিন হওয়া শর্ত নয়। কোরআনে বর্ণিত লুত (আ.)-এর জাতির ঘটনা ও বদর যুদ্ধে ফেরেশতাদের সাহায্যের বিবরণ থেকে বোঝা যায় অবিশ্বাসীরাও ফেরেশতার দেখা পেতে পারে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিস থেকে জানা যায়, বদর যুদ্ধের দিন মুশরিকরা ফেরেশতাদের সৈনিকরূপে দেখতে পায়। ফেরেশতাদের ঘোড়ার পায়ের শব্দ ও চাবুকের আওয়াজও যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা শুনতে পেয়েছিল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৭৬৩)

মানুষ ও ফেরেশতার সাক্ষাতের কয়েকটি ঘটনা

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বর্ণনায় নবী-রাসুল নন এমন মানুষ ও ফেরেশতার সাক্ষাতের যেসব ঘটনা পাওয়া যায় তার কয়েকটি হলো,

এক. মারিয়াম (আ.) : ঈসা (আ.)-এর মা মারিয়াম (আ.) পুরুষরূপে একজন ফেরেশতার সাক্ষাৎ পান। যিনি তাঁকে সন্তান লাভের সুসংবাদ দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তার কাছে আমার রুহকে (জিবরাঈল) প্রেরণ করলাম, সে তার কাছে পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল। মারিয়াম বলল, যদি তুমি আল্লাহকে ভয় করো, তবে আমি তোমার কাছ থেকে দয়াময়ের কাছে আশ্রয় চাইছি।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ১৭-১৮)

দুই. সারা (আ.) : ইবরাহিম (আ.)-এর স্ত্রী সারা (আ.)ও ফেরেশতার সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। কোরআনে সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে, ‘তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। সে হেসে ফেলল। অতঃপর আমি তাকে ইসহাকের এবং ইসহাকের পরবর্তী ইয়াকুবের সুসংবাদ দিলাম। সে বলল, কী আশ্চর্য! আমি সন্তান জন্ম দেব, আমি বৃদ্ধা আর এই আমার স্বামী বৃদ্ধ! এটি অবশ্যই এক অদ্ভুত ব্যাপার। তারা (ফেরেশতারা) বলল, ‘আল্লাহর কাজে তুমি বিস্ময় বোধ করছ? হে পরিবারবর্গ! তোমাদের ওপর রয়েছে আল্লাহর অনুগ্রহ ও কল্যাণ। তিনি তো প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৭১-৭৩)

তিন. লুত (আ.)-এর জাতি : লুত (আ.)-এর জাতি বিকৃত যৌনচর্চায় অভ্যস্ত ছিল। সমকামিতার মতো ব্যাধি সে সমাজে বিস্তার লাভ করে। লুত (আ.) তাদের এই বিকৃত মানসিকতা ও ভয়াবহ পাপ থেকে বেঁচে থাকার আহ্বান জানায়। কিন্তু ক্রমেই তাদের অবাধ্যতা বাড়তে থাকে। আল্লাহ তাদের ধ্বংস করার জন্য একদল ফেরেশতা প্রেরণ করেন। তারা সুদর্শন পুরুষের আকৃতিতে আসে। ফলে তারা আগত ফেরেশতাদের ওপর হামলে পড়ে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা লুতের কাছে এলো, তখন তাদের আগমনে সে বিষণ্ন হলো। নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল এবং বলল, এটি একটি নিদারুণ দিন। তার সম্প্রদায় তার কাছে উদভ্রান্তের মতো ছুটে এলো এবং তারা আগে থেকে কুকর্মে লিপ্ত ছিল। সে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! এরা আমার কন্যা, তোমাদের জন্য তারা পবিত্র। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। আমার মেহমানের ব্যাপারে আমাকে হেয় কোরো না। তোমাদের মধ্যে কি কোনো ভালো মানুষ নেই?’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৭৭-৭৮)

চার. মুসা (আ.)-এর মা : আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি ওহি অবতীর্ণ করেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমার মায়ের প্রতি ওহি অবতীর্ণ করলাম, যা অবতীর্ণ করার।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ৩৮) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এই আয়াতের অর্থ এভাবে করেছেন, ‘আমি ওহি অবতীর্ণ করলাম, যেমন নবীদের প্রতি করেছিলাম।’ (আবদুল্লাহ জাবের, আহলুলহাদিদ ডটকম, প্রকাশ : ২৬ মে ২০১২)

এই ব্যাখ্যা ও সুরা কাসাসের বর্ণনা থেকে অনুমান হয়, মুসা (আ.)-এর মায়ের সঙ্গে হয়তো ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল।

পাঁচ. সুলাইমান (আ.)-এর রাজ্যের অধিবাসী : আল্লাহ সুলায়মান (আ.)-এর রাজ্যের অধিবাসীদের পরীক্ষার জন্য হারুত ও মারুত নামে দুজন ফেরেশতা পাঠান। মানুষের আকৃতিতে তারা সেখানে অবস্থান করে। কোরআনে সেই ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সুলাইমানের রাজ্যে শয়তানরা যা পাঠ করত, তারা তার অনুসরণ করে। সুলাইমান কুফরি করেনি; বরং শয়তানরাই কুফরি করেছে। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবেল শহরে হারুত-মারুত ফেরেশতাদ্বয়ের ওপর অবতীর্ণ হতো। তারা দুজন কাউকে এই কথা না বলে কিছু শেখাত না যে আমরা পরীক্ষাস্বরূপ। সুতরাং তুমি কুফরি কোরো না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০২)

ছয়. সাহাবিদের মজলিস : সাহাবিদের উপস্থিতিতে রাসুল (সা.)-এর কাছে মুসাফিরের বেশে জিবরাঈল (আ.) আসেন এবং তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। রাসুল (সা.) তার উত্তর দেন। তিনি বলে যাওয়ার পর রাসুল (সা.) বলেন, ‘ইনি জিবরাঈল। তিনি তোমাদের দ্বিন শেখাতে এসেছিলেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২)

সাত. বনি ইসরাইলের তিন ব্যক্তি : বনি ইসরাইলের তিন ব্যক্তি, যারা অন্ধ, টাকবিশিষ্ট ও কুষ্ঠ রোগী ছিল। আল্লাহ তাদের পরীক্ষার জন্য ফেরেশতা পাঠান এবং তাদের মাধ্যমে তাদের রোগমুক্ত করেন। তবে পরবর্তী সময়ে তারা তা ভুলে যান। (বিস্তারিত দেখুন : সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৭৭)

আট. আল্লাহর জন্য সম্পর্ক রক্ষাকারী : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি অন্য গ্রামে বসবাসকারী তার এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে বের হন। পথিমধ্যে একজন ফেরেশতা আসেন এবং বলেন, কোথায় যাচ্ছ? তিনি উত্তর দেন, এই গ্রামে বসবাসকারী ভাইয়ের কাছে। ফেরেশতা বললেন, তোমার প্রতি কি তার কোনো অনুগ্রহ আছে? তিনি বলেন, না, তবে আমি তাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। তখন ফেরেশতা বলেন, আল্লাহ আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন, যেমন তুমি তাঁকে ভালোবাসো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৭)

ফেরেশতারা কি শুধু মানুষের আকৃতিতে আসে?

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের যেকোনো আকৃতি ধারণের শক্তি দিয়েছেন। তাই ফেরেশতারা শুধু মানবাকৃতিতেই দেখা দেয় না; বরং কখনো কখনো ভিন্ন আকৃতিতেও আসে। উসাইদ বিন হুদাইর (রা.) সুরা বাকারা বা সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করছিলেন। এমন সময় তাঁর ঘোড়াটি কয়েকবার ডেকে ওঠে। তিনি বের হয়ে আকাশের দিকে তাকালে আলোর প্রদীপ বা মেঘমালার ভেতর প্রদীপ দেখতে পান। এই ঘটনা তিনি রাসুল (সা.)-কে বললে তিনি আবারও তাঁকে তিলাওয়াত করতে বলেন এবং আসমানের দিকে তাকালে তিনি মেঘমালার ভেতর প্রদীপ সদৃশ বস্তু দেখতে পান। এরপর তিনি বলেন, ‘তারা একদল ফেরেশতা। তোমার তিলাওয়াতের আওয়াজ শোনার জন্য (পৃথিবীর) নিকটবর্তী হয়েছে। যদি তুমি সকাল পর্যন্ত তিলাওয়াত করতে, তবে তারা সকাল পর্যন্ত অবস্থান করত এবং মানুষ তাদের দেখতে পেত।’ (আল ইসাবা : ৪/৪৮২)

ফেরেশতারা কেন পুরুষরূপে হাজির হন

ফেরেশতারা লিঙ্গ পরিচয়ের ঊর্ধ্বে। আল্লাহ তাদের নারী বা পুরুষ বানাননি। তবে কোরআন ও হাদিসের বর্ণনায় মানুষ ও ফেরেশতার সাক্ষাতের যে বিবরণ পাওয়া যায়, তাতে ফেরেশতাদের পুরুষের রূপ ধারণ করতে দেখা যায়। পবিত্র কোরআনেও তাদের ব্যাপারে পুরুষবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর কারণ কী? মুফাসসিররা এর উত্তরে বলেন, প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বিভিন্ন কাফির ও মুশরিক সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা। আল্লাহ তাদের বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত করার জন্য পুরুষরূপে তাদের প্রেরণ করেন। পবিত্র কোরআনেও তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রতিবাদে বলা হয়েছে, ‘তারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা প্রতিপন্ন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর বান্দা। তারা কি তাদের সৃষ্টির সময় উপস্থিত ছিল? অতি শিগগিরই তাদের সাক্ষ্য লিখে রাখা হবে এবং তারা জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ১৯)

এ ছাড়া সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, মানুষের প্রকৃতি ইত্যাদি বিবেচনায় নারীর চেয়ে পুরুষরূপে আবির্ভূত হওয়াই ছিল বেশি কার্যকর। (তাফসির আল-বাহরুল মুহিত : ৪/৮৩)

সম্পর্কিত পোস্ট

আজ দুর্গোৎসবের মহানবমী

banglarmukh official

ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় যেসব আমল করবেন

banglarmukh official

শবে কদরের রাতে করতে পারেন যেসব ইবাদত ও আমল

banglarmukh official

রমজানে গোপনভাবে দানসদকা

banglarmukh official

কোরআনের বর্ণনায় রোজা ও রমজান

banglarmukh official

ইসলামের দৃষ্টিতে সুদ

banglarmukh official