39 C
Dhaka
এপ্রিল ২৯, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জেলার সংবাদ দূর্ঘটনা নারী ও শিশু

সড়কে জন্ম নেওয়া শিশুকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

নিউজ ডেস্কঃ ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুকে তাৎক্ষণিক এককালীন পাঁচ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) দুর্ঘটনাকবলিতদের জন্য গঠিত কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানকে ১৫ দিনের মধ্যে এই অর্থ শিশুর অভিভাবককে দিতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে, ওই শিশুর কল্যাণে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত। ওই শিশুর পরিবারকে কেন যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ট্রাক মালিক মঞ্জুরুল ইসলামকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহাসিব হোসেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দীন।

আদেশের বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মাহাসবি হোসেন বলেন, ১৫ দিনের ওই নবজাতকের আইনগত অভিভাবকের কাছে ৫ লাখ টাকা দিতে সড়ক পরিবহন আইনে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমাজ কল্যাণ সচিব এই শিশুর দেখভালের জন্য একটি কমিটি গঠন করবেন।

ওই কমিটি শিশুটির কল্যাণে কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা ৩ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিয়ে উচ্চ আদালতকে জানাবে। রুলে ওই শিশুর জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

ট্রাস্টি বোর্ড সম্পর্কে সড়ক পরিবহন আইনের ৫২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো মোটরযান হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিলে, উক্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার উত্তরাধিকারীদের পক্ষে মনোনীত ব্যক্তি ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, চিকিৎসার খরচ প্রাপ্য হইবেন।

৫৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ধারা ৫২ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে আর্থিক সহায়তা তহবিল নামে একটি তহবিল গঠিত হইবে।

(২) কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান হইতে মোটরযানের শ্রেণি বিন্যাস বিবেচনাক্রমে প্রত্যেক মোটরযানের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা আদায় করিবে।

(৩) মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (২) এর অধীন আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা দিতে বাধ্য থাকিবে।

৫৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ৫৩ তে উল্লিখিত আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার উদ্দেশ্যে সরকার একজন চেয়ারম্যানসহ নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করিবে।

এর আগে সোমবার (১৮ জুলাই) জনস্বার্থে আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনার পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহাসিব হোসেন। রিটে দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ট্রাক মালিকের কাছ থেকে কী কী সহযোগিতা করা যায় তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে রোববার (১৭ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহাসিব হোসেন বিষয়টি হাইকোর্টে উপস্থাপন করেছিলেন। ওইদিন বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপিত করা হয়।

এর আগে শনিবার (১৬ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন।

পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রত্না বেগম মারা যান। মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রত্না বেগমের পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়।

পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতক শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

তবে যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই নবজাতক বর্তমানে ওই হাসপাতালেই আছে।

রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক ও অন্য দুই সন্তানের সহায়তা হিসাব নম্বর সোনালী ব্যাংকের ৩৩২৪১০১০২৮৭২৮, ব্যাংক হিসাবটি ইউএনও এবং নবজাতক শিশুর দাদা ও দাদি পরিচালনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে ঘাতক ট্রাকচালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি আ ন ম ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

ফেরি করে মাদক বিক্রি করতেন ৬ নারী

banglarmukh official

ফেরি ডুবি: ৬ দিনপর সহকারী মাস্টার পিরোজপুরের হুমায়‍ুনের লাশ ‍উদ্ধার

banglarmukh official

পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৮ টি যানবাহনসহ ফেরি ডুবি

banglarmukh official

মাদকাসক্ত স্বামীর সহায়তায় তিন বন্ধুর হাতে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ!

banglarmukh official

ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৫

banglarmukh official

ছেলে হত্যায় বাবার মৃত্যুদণ্ড

banglarmukh official