অনলাইন ডেস্ক:
ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে খালা সুরমা বেগমের (২৫) মৃত্যুর পর অগ্নিদগ্ধ ভাগ্নে খাদিজা আক্তারেরও (১০) মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরপরই ভাগ্নে খাদিজার মৃত্যু হয়। এর আগে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় খালা সুরমা বেগমের।
আগুনে দগ্ধ খাদিজার মা অংকুর বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার ভোরে লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মহিউদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীরা জানান, বড় বোন অংকুর বেগমের বাড়ি বেড়াতে আসেন সুরমা বেগম। গতকাল রাতে খাবার খেয়ে ঘরের সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে দুর্বৃত্তরা ঘরে আগুন দেয়। আগুন মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে মারা যান সুরমা বেগম।
এ সময় সুরমার বড় বোন অংকুর বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে খাদিজা অগ্নিদগ্ধ হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে অংকুর বেগম ও তার মেয়ে খাদিজাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে খাদিজা বেগমের মৃত্যু হয়।
নিহতদের স্বজন মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মো. রফিকের সঙ্গে চার মাস আগে সুরমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। এ নিয়ে প্রায়ই সুরমা বেগমকে মারধর করত স্বামী। পরে সুরমাকে বাবার বাড়ি রেখে যায় রফিক। দীর্ঘদিন রফিক তার স্ত্রীর খোঁজ এবং ভরণ-পোষণ না দেয়ায় সুরমার বাবা স্থানীয় একটি এনজিওতে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে ওই এনজিও কর্তৃপক্ষ রফিককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রফিক শুক্রবার রাতে আগুন দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আমাদের ধারণা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সিনিয়র কনসালট্যান্ট এমএ আজাদ সজল বলেন, এখানে ভর্তির পরপরই খাদিজার মৃত্যু হয়। তার মা অংকুর বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
লালমোহন থানা পুলিশের ওসি মীর খাইরুল কবির বলেন, অগ্নিসংযোগ করে দুইজনকে পুড়িয়ে হত্যা এবং একজনকে দগ্ধের ঘটনায় মামলা দায়েরসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।