বাবা-মাকে তাড়িয়ে বাড়ি দখল করে ইয়াবা ও রমরমা দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে ফেনীতে চার তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি কাওসার বিন কাশেম নিলয়ের বিরুদ্ধে। গত ৭ জানুয়ারি সোমবার ওই বাড়ি থেকে চার তরুণীকে উদ্ধারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এদিকে এ ঘটনায় কাওসারসহ চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ফেনী শহরের রামপুর সৈয়দ বাড়ি লেনের ‘কাশেম কটেজের’ মালিক আবুল কাশেম। চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইতালি, মেঝ ছেলে স্ত্রী হত্যার দায়ে কারাগারে, কাওসার ও তার ছোট ভাই দুইজন ইয়াবা ও নারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে দুই ভাই বৃদ্ধ বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নিরুপায় হয়ে তারা শহরের পাঠান বাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। বাবা-মা চলে যাওয়ার পর বিভিন্নস্থান থেকে তরুণীদের এনে তারা দেহ ব্যবসা করে। এখানে ফেনী শহরের অনেক নামিদামি লোকদের আনাগোনা রয়েছে বলে জানা যায়।
জানা যায়, কাওসার বিয়ের কয়েক বছর পর তার স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে সে নেশার জগতে প্রবেশ করে। বাবা-মাকে তাড়িয়ে দেয়ার পর বিভিন্নস্থান থেকে তরুণীদেরকে এনে ৬ মাস ধরে দেহ ব্যবসা করে। রাজধানীর মিরপুর এলাকার ১০নং মোল্লা ভিলার বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল হকের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে প্রিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। প্রিয়ার মাধ্যমে ফাতেমাসহ আরও দুই তরুণীকে এনে দেহ ব্যবসা করে কাওসার। এর কয়েকদিন পর কৌশলে প্রিয়া পালিয়ে যায়। ওই তরুণীদের বাসায় বন্দি রেখে ইয়াবা ও দেহ ব্যবসা চালায়। নির্বাচনের পর লোকজন না আসায় তাদের মারধর করে কাওসার। তাদের কান্নার শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে ৭ জানুয়ারি সোমবার শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহজাহান মিয়া ওই বাসার তালা ভেঙে জিন্মিদশা থেকে চার নারী ও ৫৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মূলহোতা কাওসার পালিয়ে গেলেও ফেনী সদর উপজেলার মধ্যম কাছাড় গ্রামের আবু ইউছুপের ছেলে মো. ওমায়ের, সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের ব্রমনী বাজার গ্রামের আলী ফরহাজী বাড়ির আবুল কালামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আরমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী রামপুর এলাকা থেকে কাওসার ও ছোটনকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহজাহান মিয়া। এ ঘটনায় একই দিন ফাতেমা বাদী হয়ে কাওসারকে প্রধান আসামি ও ১২-১৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান মিয়া জানান, মামলার মূলহোতা কাওসারসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও কাওসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।