অনলাইন ডেস্ক:
যৌতুকের দাবিকৃত ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে এসে পাষন্ড স্বামী কর্তৃক ছয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মুন্নী বেগমকে (২৫) শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।ফলে ওই গৃহবধূর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে।
সোমবার সকালে শেবাচিম হাসপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতিতা মুন্নী বেগমের গর্ভপাত ঘটে।
গৌরনদীর বার্থী গ্রামের মজিবর কাজীর স্ত্রী ও নির্যাতিতার মা অজুফা বেগম জানান,গত ছয়বছর পূর্বে তার কন্যা মুন্নী খানমকে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের মৃত আয়নাল হাওলাদারের পুত্র সবুজ হাওলাদারের সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় মেয়ে জামাতা সবুজকে নসিমন ক্রয়ের জন্য দাবিকৃত যৌতুকের নগদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ১ ভরি স্বর্ণালংকারসহ দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল দেয়া হয়।
গত ৬ মাস পূর্বে যৌতুকলোভী সবুজ নসিমন মেরামতের জন্য ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য মুন্নীকে চাঁপ প্রয়োগ করে।দাবিকৃত যৌতুকের টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রায়ই সবুজ তার স্ত্রী মুন্নীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ জানুয়ারি রাতে মুন্নীকে মারধর করে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
এরইমধ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারী সকালে দাবিকৃত যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে সবুজ হাওলাদার বার্থী গ্রামের তার শ্বশুর বাড়িতে এসে বাড়িতে মুন্নীকে একাকী পেয়ে বেদম মারধর করে তার হাত ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এ সময় মুন্নীর চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে মুন্নীকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। একইসময় সবুজকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
অজুফা বেগম আরও জানান, গৌরনদী হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মুন্নীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০ ফেব্রুয়ারী দুপুরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার পর শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দেখতে পান মুন্নীর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে।পরবর্তীতে সোমবার সকালে মুন্নীর গর্ভপাত ঘটানো হয়।
এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার এসআই মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়েরকৃত মামলায় সবুজ হাওলাদার (৩১) বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্র্কে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের কাছে ডাক্তারী রিপোর্ট চাওয়া হবে।