স্টাফ রিপোর্টার// শাওন অরন্য:
আম্মা আমার কলিজার ভেতর জ্বালাপোড়া করতেসে। আমার ভয় করতেসে খুব। শ্বাশুড়ি কার সাথে যেন ফিসফিস করে ফোনে কথা বলতেসে কয়েকদিন ধরে।… খুনের দিন সকালে ফোনে এভাবেই কথা বলছিলো মায়ের সাথে সালমা। গত ১৯ মে ২০১৯ আনুমানিক সকাল ১০ টার দিকে ফরিদগঞ্জের ঘনিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পরিকল্পিতভাবে খুন হয় গৃহবধু সালমা। নিহতের ফুপাত ভাই কামরুল হাসানের কাছ থেকে জানা যায়, সকালে কুরআন তিলাওয়াত করে ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বিছানায়! কে জানতো এটাই তার শেষঘুম হবে! কতটা নির্দয় হলে হাতপায়ের রগ কেটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে পারে ঘুমন্ত মানুষটাকে! তিনি আরো বলেন, বোনটা একেবারেই কম বয়সী ছিল। চাঁদপুর সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে তারা অবশ্যই জানেন, সেখানে মেয়েদের বিয়ে থা হয় সাধারণত অল্প বয়সে। সেটাও ছেলেমেয়ের বয়সের এক লং ডিস্টেন্সে। মেয়ে ১৫ বছরের হলে জামাই হবে ৩২-৩৫ বছরের। বিদেশ ফেরত, টাকা ওয়ালা। আমার মামাতো বোনটার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী। স্বামী-স্ত্রীর মিল মহব্বত বরাবরই সহ্য হতো না শ্বাশুড়ির। বোনটা সহজ সরল ছিল ও কথা কম বলতো। আর এটাকেই হাতিয়ার বানিয়ে জঘন্যরকম নানা অপবাদ দিতেও পিছপা হয়নি কখনই তার শাশুড়ি। জামাই যদি কাপড়চোপড় ইত্যাদি কিছু ওর শ্বাশুড়িকে জিজ্ঞেস না করে দিতো তাহলেই বেঁধে যেত তুলকালাম কাণ্ড। খুনের দুইদিন আগের ঘটনা। জামাই ওর জন্য লেহাঙ্গা পাঠিয়েছিলো। সেটা পরে ভিডিও কলে দেখাতে বলায় সালমা সেজেগুজে সেটা স্বামীকে দেখাচ্ছিলো। এ নিয়ে তার শ্বাশুড়ি খুবই নোংড়া নোংড়া ও জঘন্য বাক্যব্যয়ে গালিগালাজ করে। বর্তমানে শ্বাশুড়ি আর ননদরা পলাতক। প্রভাবশালী নেতাদের মাধ্যমে থানায় ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে খুনকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। পুলিশ লাশ নিয়ে গেছে পোস্ট মর্টেমের জন্য।