বরিশালের মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের পৈক্ষা-নমরহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘ চার মাস ধরে তালা ঝুলছে। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গাছুয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। চার মাস ধরে তালাবদ্ধ থাকায় এ এলাকার মানুষদের চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরত্বে উপজেলা সদরে।
অন্যদিকে ডাক্তার-স্বাস্থ্য সহকারী, অফিস সহকারী কেউ না থাকায় অযতœ-অবহেলায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যেখানে নিয়মিত একজন চিকিৎসক থাকার কথা সেখানে তালা খোলার মতো কেউ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। গাছুয়া ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের পৈক্ষা-নমরহাট এলাকায় দোতলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি উদ্বোধনের পর কিছুদিন ঠিকঠাক মতো চললেও কয়েকদিনের মধ্যে কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে।
একজন ডাক্তারকে দায়িত্ব দেয়া হলেও ইউনিয়নবাসী কোনো দিন ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা পাননি। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সদ্যবিদায়ী স্বাস্থ্য সহকারী শওকত হোসেন হিরুকেই সবাই ডাক্তার মনে করতেন। তিনি সপ্তাহের দুই থেকে তিনদিন রুটিন করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসতেন এবং সাধারণ মানুষকে কিছু কিছু ওষুধ বিতরণ করতেন। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী শওকত হোসেন হিরু চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার আগে সর্বশেষ জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় একবার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসেছিলেন।
এরপর থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে হতদরিদ্র মানুষ ওষুধ নিতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। চার মাস ধরে তালাবদ্ধ থাকায় স্থানীয়দের চিকিৎসার জন্য প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরত্বে উপজেলা সদরে যেতে হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল কম থাকায় পৈক্ষা-নমরহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে লোক দেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে আলীমাবাদ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী সাজ্জাদ হোসেনকে সপ্তাহের তিনদিন পৈক্ষা-নমরহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সহকারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পৈক্ষা-নমরহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংস্কারের কাজ করার কথা থাকায় আমি সেখানে যাইনি। আলীমাবাদ থেকে পৈক্ষা-নমরহাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দূরত্ব কম নয়। সেখানে সপ্তাহের ৩ যাওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।