আমি রিক্সা চালাই। ১৩ বছরের ছেলে আমার। অষ্টম শ্রেনীতে পড়ত। ওর মা মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করতো। দুই জনের কষ্টের আয় দিয়েই চলত আমার ছেলে সম্রাটের ভরন পোষনসহ লেখাপড়ার খরচ। সেই ছেলে আজ আমাদের ছেড়ে বহুদূরে জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে বন্ধী। আমি আমার নির্দোষ ছেলের মুক্তি চাই। কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছিলেন নগরীর রিফিউজি (খালেদা বাদ) কলোনীর ছালাম কসাইর ভাড়াটিয়া রিক্সা চালক শাহিন খলিফা।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপ কালে রিক্সা চালক শাহিন ঘামে ভেজা গামছা দিয়ে চোঁখ মুছতে মুছতে বলেন,আমার ছেলেটি অতন্ত নিরিহ ও শান্ত প্রকৃতির। গত ৭ এপ্রিল বরিশাল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্টিত বি এনপি’র জনসভায় যায় আমাদের এলাকা থেকে যাওয়া মিছিলের সাথে। ওখানে বসে দেখা হয় স্থানীয় বখাটে ইমন,সাব্বির,হ্নদয় (১),হ্নদয় (২) এর সাথে। এসময় ওই বখাটেরা সম্রাটকে একটি স্কুল ব্যাগ দিয়ে বলে যে এটা তোর সাথে রাখ এবং একটি গলির মূখে তাকে দাড়িয়ে রেখে চলে যায়। কিছুক্ষন পরে নিরাপত্তার দায়ীত্বে থাকা কোতয়ালী পুলিশের একটি টিম সম্রাটকে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে কারন জিজ্ঞাসা করলে সম্রাট কোন উত্তর দিতে না পাড়ায় সম্রাটের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি ছোট আম কাটার চাকু উদ্ধার করে।
এসময় সম্রাট ব্যাগটি তার নয় এবং এটি ইমনের বল্লে পুলিশ পরবর্তীতে ইমনের বাসা তল্লাশি করে অনেক গুলো ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। কিন্তু তারা বখাটে ইমন কিংবা তার সহযোগী স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাব্বির কিংবা হ্নদয়দের কাউকে গ্রেফতার করতে না পেরে সম্রাটকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেন। বিজ্ঞ আদালত সম্রাটকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেয়।
শাহিন খলিফা আরো বলেন, থানা থেকে আমাকে বলা হচ্ছে আসল আসামীদের ধরিয়ে দে। তারপর তোর ছেলে সম্রাট মুক্তি পাবে। কিন্তু ওরা তো পালিয়ে রয়েছে আর আমার নির্দোষ ছেলেটি জেলের ভিতরে ডুকরে ডুকরে কাদছে। এদিকে ছেলের শোকে আমার স্ত্রী নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
টাকার অভাবে আমি তার চিকিৎসাও করতে পারছিনা। কারন আমি একজন রিক্সা চালক। এটাই আমার বড় পরিচয়। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আমার নির্দোষ ছেলেটার মুক্তি চাই। নইলে ওর মাকে বাঁচানো যাবেনা।