28 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ জেলার সংবাদ বরিশাল

অনেক সূত্র ফেসবুক মেসেঞ্জারে

বরগুনায় প্রকাশ্যে নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে খুনের কাণ্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এদিকে নানা অপরাধ ও অপকর্মের লক্ষ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ‘কিলিং স্কোয়াড ০০৭’ নামে একটি গ্রুপ খুলেছিল নয়ন। এ গ্রুপের বার্তায় আসে রিফাত শরীফকে হত্যার নির্দেশ। হত্যাকালের ভিডিও ফুটেজের পাশপাশি কিলিং স্কোয়াড ০০৭-এ আদান-প্রদান করা খুনিদের তথ্যাদিও এখন রিফাত হত্যাকাণ্ডে অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তের অন্যতম ক্লু।

এ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী গতকাল রাত পর্যন্ত ধরা পড়েনি। তারা এখন কারও আশ্রয়ে, নাকি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশ ছেড়েছে-এ প্রশ্ন অনেকেরই। জানা গেছে, ঘাতক নয়ন বন্ড বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার সন্ত্রাসী গ্রুপের নাম রাখে ‘০০৭’। এমনকি নিজের নামও ওই গোয়েন্দা চরিত্র অনুযায়ী ‘নয়ন বন্ড’ রাখে। তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে যুক্ত করে রিফাত ফরাজীকে। বরগুনার কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘিরপাড়, কেজিস্কুল ও ধানসিঁড়ি সড়ক এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতো এ গ্রুপের সদস্যরা। নয়নের নেতৃত্বে গ্রুপটি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থীদের মেসগুলোতেও প্রায়ই হানা দিয়ে লুটতরাজ করত। ছিনতাই-চাঁদাবাজির পাশপাশি নারীদের উত্ত্যক্ত করাও ছিল ০০৭ গ্রুপের সদস্যদের নিত্যকাজ।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রিফাত শরীফকে হত্যার মিশন ঠিকঠাক মতো সম্পন্ন করতে ঘটনার আগের দিন সকাল থেকেই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে খুনের নানা ছক কষে নয়ন বন্ড। কোথায়, কীভাবে হত্যা করা হবে, কিলিং মিশনে থাকা সদস্যদের কার কী ভূমিকা থাকবে, তা ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানিয়ে দেয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে তাদের কথোপকথনের তথ্যানুযায়ী ঘাতক রিফাত ফরাজী ঘটনার আগের দিন রাত ৮টার দিকে ০০৭ গ্রুপের সদস্যদের সরকারি কলেজের সামনে থাকার নির্দেশ দেয়। ‘Mohammad’ ও ‘সাগর’ নামের দুজন ওই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানতে চায়-তাদের কোথায় ও কখন থাকতে হবে। জবাবে রিফাত ফরাজী ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ‘দা’-এর একটি ছবি দিয়ে তাদের বলে-পারলে এইটা নিয়া থাইকো।

তখন ‘Mohammad’ জবাব দিয়ে জানায়, ‘দা’ নিয়ে হাজির থাকবে সে। সে অনুযায়ী কিলিং স্কোয়াডের সদস্যরা ঘটনার দিন সকাল ৯টার মধ্যেই বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে হাজির হয়। এর পর তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন রিফাতের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর নয়ন তার গ্রুপের মাধ্যমে হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া সবাইকে গ্রেপ্তার এড়াতে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়। অভিযোগ রয়েছে-নয়ন বন্ডের গ্রুপটি ২০১৭ সালে রাকিব নামের এক কিশোর ও জীবন নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে। ০০৭ গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ভাড়ায়ও খাটত। তাদের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে; কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে তারা দিনের পর দিন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।

রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায়ও গ্রেপ্তার এড়াতে বুধবার সন্ধ্যার পরই নয়ন ও রিফাত ফরাজী আত্মগোপন করে। গতকাল পর্যন্ত এ দুই ঘাতক ধরা পড়েনি। অবশ্য তারা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে জন্য দেশের সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে কোনো কোনো সূত্র দাবি করেছে, তারা দুজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেই আছে। তবে কেউ স্বীকার করছে না।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি হাসান ও চন্দনকে সাতদিন করে আর সন্দেহভাজন নাজমুল হাসানকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।’

এদিকে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, ‘ঘটনার দুদিনেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মূল আসামিরা ধরা পড়েনি। তবু গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমার ছেলে হত্যার ঘটনায় তৎপরতাসহ গণমাধ্যমের সহায়তায় আমি সন্তুষ্ট। আমি আশা করি শিগগিরই মূল আসামিরা ধরা পড়বে এবং আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার পাব।’

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official