আগামীকাল ওভালে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। অন্য যেকোনবারের তুলনায় এবার বাংলাদেশ দলের ওপর আশা ভরসা সবচেয়ে বেশি। সমর্থকরা ইতিমধ্যে স্বপ্ন দেখছেন টাইগারদের সেমিফাইনাল খেলা নিয়ে। সেই মিশন টাইগাররা শুরু করছে আগামীকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাই। একুশবারের মুখোমুখি দেখায় বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে মাত্র ৩ বার, ১৭ বার জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত। বিশ্বকাপে অবশ্য লড়াইয়েও এগিয়ে প্রোটিয়ারা। ৪ বারের দেখায় বাংলাদেশ জিতেছে একবার আর আফ্রিকা জিতেছে ৩ বার। ২০০৭ বিশ্বকাপে ৮৭ রানে জিতেছিল টাইগাররা।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে দলগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৭ তে ইস্ট লন্ডন মাঠে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৬৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। সে ম্যাচে ৩৭০ রান তাড়া করতে নেমে টাইগাররা গুটিয়ে যায় ১৬৯ রানেই, প্রোটিয়ারা জয় পায় ২০০ রানের বিশাল ব্যবধানে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২৭৮/৭। মুশির হার না মানা ১১০ রানের ইনিংসে সেদিন ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান তোলে বাংলাদেশ। অবশ্য সেই ম্যাচ ১০ উইকেটে জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে দলগত সর্বনিম্ন স্কোর বাংলাদেশের।
২০১১ বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাট করে ৭৮ রানে গুটিয়ে যায় সাকিব বাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন রান ১৬২, ২০১৫ তে সেই ম্যাচে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। দুই দলের মধ্যকার খেলায় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জেতার রেকর্ডও দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০০ রানের বেশি ব্যবধানে তারা জিতেছে দুইবার, ১০ উইকেটে জয়লাভ করেছে তিনবার। বাংলাদেশের তিন জয় এসেছে ২০০৭ বিশ্বকাপে ৬৭ রানে, ২০১৫ সালে ৭ ও ৯ উইকেটের ব্যবধানে।
দুই দলের ব্যাটসম্যান বোলার সবখানেই রাজত্ব আফ্রিকানদের। সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করেছেন গ্রায়েম স্মিথ, ১২ ইনিংসে তার সংগ্রহ ৫৭২ রান। বাংলাদেশিদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান সাকিবে, ১৩ ইনিংসে ৩২২। তবে সবচেয়ে বেশি শুন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডটা বাংলাদেশের, আব্দুর রাজ্জাক ৭ ইনিংস খেলে ৩ বার শুন্য রানে আউট হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
বোলিং রেকর্ডেও এগিয়ে প্রোটিয়ারা, সবচেয়ে বেশি উইকেটের তালিকায় প্রথম চারজনই দক্ষিণ আফ্রিকার। মাখায়া এনটিনি নিয়েছেন সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট। বর্তমান দক্ষিণ আফ্রিকা দলে থাকা কার্গিসো রাবাদা ৬ ম্যাচে তুলে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। বলা বাহুল্য, তার অভিষেক হয় বাংলাদেশের বিপক্ষে, এবং অভিষেকেই তিনি হ্যাট্ট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন। বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট রুবেল হোসেনের, ৬ ম্যাচে তিনি শিকার করেছেন ১২ উইকেট। সাকিব আল হাসানও ১২ উইকেট শিকার করেছেন, তবে তা ১৩ ম্যাচে।
২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৭ রানের জয় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা সাফল্য। এরপর গত বিশ্বকাপের পর নিজেদের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওয়ানডে সিরিজ হারায় মাশরাফি বাহিনী। এছাড়া আর সবদিক দিয়েই প্রোটিয়াদের চেয়ে পিছিয়ে আছে টাইগাররা। তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এবার নিজেদের খানিকটা এগিয়ে নেবার কথা ভাবতেই পারে টাইগাররা।