33 C
Dhaka
জুলাই ১৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
প্রচ্ছদ বরিশাল রাজণীতি

ইকবাল হোসেন তাপসেই বিভক্ত বরিশাল জাপা!

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে বরিশাল জাতীয় পার্টিতে। অচেনা মুখকে দলীয় মেয়র প্রার্থী হওয়ায় এই নির্বাচনে বিদ্রোহের আশঙ্কা তৈরি হয়েছ। দলটির বরিশাল জেলা কমিটির তুখোর নেতা বশির আহম্মেদ ঝুনু মনোয়ন বঞ্চিত হয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবশ্য ইতিমধ্য এই প্রার্থী নির্বচন কমিশনে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভেতরে ভেতরে বরিশাল সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ঝুনুকে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে উৎসাহ যোগাচ্ছেন জেলার শীর্ষ সারির কয়েক নেতা। বিশেষ করে এই মহলটি ঝুনুকে আগামী নির্বাচনে শক্তপোক্ত প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন। যে কারণে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধাচারণ করার সক্ষমতা দেখিয়েছেন।

কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসকে কোন ধরনের সহযোগিতা না করে ঝুনু অনুকূলে জেলার শীর্ষ নেতাদের অবস্থান। অপরদিকে আরেকটি বড় অংশ নিয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থী তাপসকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন জেলা কমিটির আহবায়ক মহশিন উল ইসলাম হাবুল ও মহানগরের সভাপতি একেএম মর্তুজাসহ আরও অনেকে। অবশ্য এই নেতার ইতিমধ্যে তাপসের সাথে মাঠে নেমে তাদের অবস্থানও পরিস্কার করেছেন।

মূলত এই ব্যক্তিকে অনেটা আকস্মিকভাবে প্রার্থী করার কারণেই বরিশাল জাতীয় পার্টিতে ফের বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তাছাড়া অচেনা মুখকে প্রার্থী করার বিষয়টিও হাবুল ঘনিষ্টরাও অনেক নেতাকর্মী ভাল ভাবে নেয়নি। যে কারণে এই বিষয়টি নিয়ে ভেতরে ভেতরে তোলপাড় যাচ্ছে। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি অনুমানে নিয়ে সংক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মুখ খুলছেন না। বরং তাসপকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

অবশ্য এই কারণে অনেক নেতাকার্মী বরিশাল জেলা কমিটির আহবায়ক মহিশিন উল ইসলাম হাবুলকেই দোষারোপ করছেন। তাদের ভাষায় মেয়র প্রার্থী তাপস সম্পর্কে বরিশালের মানুষ অবগত নয়। এমনকি জাতীয় পার্টিতে তার কোন পদপদবী নেই। দাবি করা হচ্ছে- এই ব্যক্তিকে হাবুল ব্যক্তি স্বার্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে নামিয়েছেন। তাছাড়া তাপসের ভাই বিএনপির রাজনৈতির সাথেও জড়িত রয়েছেন। ফলে রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন এই ব্যক্তিকে বরিশালের মানুষ গ্রহণ করার প্রশ্নই আসে না মনে করেন নেতাকর্মীরা।

যদিও মহশিন উল ইসলাম হাবুল বলছেন- কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে কারণে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তার ভাষায় প্রার্থী তাপসের বরিশাল জাতীয় পার্টিতে কোন পদপদবী না থাকলেও তিনি এক সময়কার জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্রসমাজের নেতা ছিলেন। সাবেক ছাত্রনেতা নাজমুল হোসেন ফয়সালের নেতৃত্বে বরিশাল সরকারি কলেজ ছাত্রসমাজের পাশে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে অংশও নিয়েছিলেন। তাছাড়া পেশায় শিল্পপতি অর্থাৎ গার্মেন্টেস মালিক তাপস বিগত সময়ে পার্টির দুর্দিনে পাশে ছিলেন।

যে কারণে সকল বিষয়াদী বিবেচনায় নিয়ে এই ব্যক্তি মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ। তাপসও বিগত সময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার দাবি করছেন। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে- দলীয় ঘরনার নেতাকর্মীরা তাপসের এমন দাবি মানতে নারাজ। বরিশাল শহরের বাসিন্দা হলেও ইকবাল হোসেন তাপসকে রাজনীতির মাঠে দেখেননি কেউ। এমনকি আপাদমস্তক রাজনৈতিক জাতীয় পার্টির বরিশাল মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম মর্তুজাও এই বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন।

কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ায় এই নেতা বিরোধীতা করার মত সাহস দেখাচ্ছেন না। তবে বলছেন এই প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ায় পার্টিতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে বিরাগভাজন হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন- এমনিতেই রাজনীতির মাঠে বরিশাল জাতীয় পার্টির অবস্থান অনেকাংশে পিছিয়ে। তার পরে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী থাকলে নির্বাচনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়াটা অপ্রত্যাশিত কিছু নয় বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া যাকে দল মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে তাকে কেউ জানেন না।

এমন বাস্তবতায় ঝুনুর মত একজন ভাল মানের নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হলে জাতীয় পার্টি পরাজয় ত্বরান্বিত হওয়াটা স্বাভাবিক। অবশ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এই ভাবনাই বাস্তবায়ন প্রশ্নে শঙ্কিত হড়ে পড়েছেন ঝুনুকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া বরিশাল জাতীয় পার্টির অন্যতম নেতা শাহ নূর-এ আলম, মহশিন মিয়া ও সাজুসহ আরও অনেকে।’ এক্ষেত্রে তাদের অভিব্যক্তি হচ্ছে- বরিশাল বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আ’লীগ ক্ষমতার গত ৫ বছরে সেই ঘাটিতে নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করেছে।

এই দুটি দলের প্রার্থীদের মধ্যে বিগত সময়ে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি প্রতীয়মাণ। সেখানে তাপসের মত অরানৈতিক ব্যক্তি কতটা শক্তপোক্ত অবস্থান রাখতে পারবেন সেই বিষয়টি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রাথী ঝুনুর ভাষ্য হচ্ছে- রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন ব্যক্তি বিশেষকে চেয়ারম্যান কেন বরিশালের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি শহরে প্রার্থীতার সুযোগ দিয়েছেন সেই বিষয়টি অনেককেই প্রশ্নে মুখোমুখি করেছে। যে কারণে এখানকার নেতাকর্মীরা ওই প্রার্থীর কাছ থেকে সরে গিয়ে তাকে (ঝুনু) সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করে এই নেতা বলেন- তাপস হাবুলের সৃষ্টি। তিনি ছাত্রসমাজের কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না।

এমনকি জাতীয় পার্টিতে তাকে দেখা যায়নি। মাসখানেক আগে বরিশাল শহরে বিলবোর্ড টাঙিয়ে তিনি নিজেকে শিল্পপতির পাশাপাশি নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। অথচ তিনি রাজধানীতে অবস্থিত একটি চীনা কোম্পানিতে চাকুরি করছেন।

বরিশাল জাতীয় পার্টির কোন কমিটিতে তার অবস্থান নেই। কিন্তু তার পরেও এখানকার কতিপয় নেতারা সুপারিশে তাকে প্রার্থীতার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে নির্বাচনে এই প্রার্থীর কাছ থেকে বরিশালের সচেতন ভোটাররা মুখ ঘুরিয়ে নেবে বলে অভিমত ঝুনুর। যদিও তাপস নিজেকে এই প্রতিবেদকের কাছেও বরিশাল জাতীয় পার্টির নেতা পরিচয় দিয়ে বলছেন- তিনি বিগত দিনে অর্থাৎ পার্টির দুর্দিনে পাশে ছিলেন। যেই বিষয়টি সম্পর্কে নেতাকর্মীরা অবগত রয়েছে বিধায় তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। ফলে নির্বাচনের মাঠে ঝুনুর মত নেতা বিরোধীতা করলে প্রভাব পড়ার সম্ভবনা খুবই কম।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official