জমি সংক্রান্ত বিরোধ থামাতে গিয়ে পটুয়াখালীর বাউফলে পুলিশ মারধরের শিকার এবং পুলিশের পিস্তল ও গুলি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য কমপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আজ সোমবার সকালে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে। প্রায় চার ঘন্টা পর দুপুর একটার দিকে ছিনতাই হওয়া ওই পিস্তল ও দশ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করা হয়েছে।
আহত তিন পুলিশ হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মাঈনুদ্দিন, পুলিশ সদস্য (কনষ্টেবল) লক্ষন সেন ও ইমরান হোসেন। তাঁদের তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং চারজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বড় ডালিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার সঙ্গে একই বাড়ির আবদুল খালেক হাওলাদাদের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। গতকাল সকালে আবদুল খালেক ও তাঁর লোকজন ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে চাষাবাদ করার জন্য যান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
সিরাজ হাওলাদারের পক্ষ থানায় অভিযোগ দিলে সহিংসতা থামাতে পুলিশের এএসআই মাঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে সোয়া নয়টার দিকে তিন সদস্যের পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
ওই সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে এক নারী অতর্কিত পুলিশের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয় এবং পুলিশের এএসআই মাঈনুদ্দিনকে মারধর করে তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তল ও ১০ রাউন্ড গুলি ফিরোজ হাওলাদার (৩০) নামে এক যুবক ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আহত ওই তিন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।পরবর্তীতে দুপুর একটার দিকে ফিরোজের বাড়ির একটি নারিকেল গাছ থেকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে।বিকেল তিনটা পর্যন্ত এ ঘটনায় আটজনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আহত তিন পুলিশ সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. আলম (৪০), সিরাজুল ইসলাম (৬৩), আবু বক্কর (২৮), অলিউল্লাহ (১৪) ও আরিফুর রহমানকে (১৮) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মো. ইলিয়াছ (২৭), মোসা. নাজমা বেগম(২৬), মোসা. মাকসুদা (৩৫), মো. শহিদুলকে (১৮) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করা হয়েছে।আর অস্ত্র ও গুলি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।