পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পরাজিত নৌকা সমর্থক ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা থামছেই না। নির্বাচন পরবর্তী গত তিন দিনে পৌরশহর ও উপজেলার ১১ ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় পরাজিত নৌকা প্রার্থীর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপরসহ তাদের বসত বাড়িতে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আজ শুক্রবার সকালে নৌকা প্রার্থী হোসাইন মোশারফ সাকুর সমর্থক উপজেলার মিরুখালীর কাটাখালী গ্রামের কৃষক হাসান (৪৫) ঘর থেকে মাঠে কৃষি কাজে যাবার পথে বিজয়ী চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সমর্থক নবী হোসেন, বাদশা ও শাজাহান দলবল নিয়ে হামলা করে আহত করে। এ সময় তার ছোট ভাই নির্মাণ শ্রমিক নুর মোহাম্মদ (৩৫) বড় ভাইকে বাচাতে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। আহত দুই ভাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
অপর দিকে আজ শুক্রবার সকালে নৌকার কর্মী মিরুখালী বাজারের ফল ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফার ছোটহারজী গ্রামে তার বাড়িতে না পেয়ে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী রাজু, জসিম ও হানিফসহ দলবলসহ মোস্তফার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৩৫) ও কলেজ পড়–য়া মেয়ে নাদিরা (১৮) কে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে আহত করে। আহত মা-মেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত মা-মেয়ে অভিযোগ করে বলেন, ওই হামলা কারীরা মিরুখালী বাজারে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট করে বন্ধ করে দেয়। তারা আরও বলেন মোস্তফা নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর থেকে হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এছাড়া গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রাজারহাট গ্রামে নৌকা সমর্থক নারী ইউপি সদস্য খাদিজা ইলিয়াস এর বসত ঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় ওই দিন রাতে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক দাউদখালী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি রজলুর রহমান সরদারসহ ১৪ জনকে আসামী করে। পুলিশ এজাহার নামীয় আসামী ইদ্রিসকে গ্রেফতার করে ।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ছোট শিংগা গ্রামে গভীর রাতে শংকর হালদার, চিত্তরঞ্জন গাইন, চঞ্চল গাইন, বিশ্বজিৎ গাইন, অমৃত গাইন, স্বপন মিস্ত্রি, পারুলসহ এক সাথে ৭ টি কুটারকুট (খড়ের) গাদায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বলছে উপজেলা নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ব্যাক্তিগত শত্রুতা মিটানোর জন্য এ হামলা করছে।
উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস অভিযোগ করেন, নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা অগনিত নেতা কর্মীর ওপর হামলা করছে। তিনি আরও বলেন, নৌকার কর্মীর বসত ঘরেও হামলার ঘটনা ঘটছে। এমনকি সংখ্যালঘুরা হামলার শিকার হয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মা-মেয়ের ওপর হামলার ঘটনাটি আমার জানা নেই। নির্বাচন পূর্বে হামলার জের ধরে দু‘একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। যা আমি কঠোর হস্তে দমন করার চেষ্টা করছি।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আব্দুল্লাহ বলেন,নির্বচনী পরবর্তী সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মা-মেয়ের ওপর হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।