28 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ প্রশাসন

‘ওসির রুমে আমাকে মারতে মারতে রক্তাক্ত করা হয়’

অনলাইন ডেস্ক :

বোনকে মারধর ও স্কুল থেকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে গভর্নিং বডির সদস্যদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতে চেয়েছিলেন আল-আমিন। এ কারণে, তাকে থানায় নিয়ে হেনস্তা করেন গভর্নিং বডির সদস্য সুইটি আক্তার শিনু। এমনকি রূপনগর থানার ওসির রুমে নিয়ে তাকে মারধর করতে করতে কান থেকে রক্ত বের করে ফেলেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোকাম্মেল।

শনিবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) মিলনায়তনে নিজের এ নির্যাতনের কথা জানান আল-আমিন।

তিনি বলেন, আমার বোন তামান্না আক্তার মুক্তি রূপনগরের কামাল আহম্মেদ মজুমদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে স্কুলের শাপলা নামের একজন শিক্ষিকার বাসায় প্রাইভেট পড়তো। গত জুনে আমরা তার কাছে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করি। উনি আমাদের কাছ থেকে ২০ দিনের বেতন পেতেন। এই টাকা না দেয়ায় ২৭ জুলাই শাপলা ক্লাসের মৌমিতা নামে এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে আমার বোনকে মারধর করান। এতে আমার বোন মারাত্মকভাবে আহত হয়। তাকে দুইটা পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি।

‘আহত বোনের বিচার চাইতে আমি স্কুলে যাই। বিচার না পেয়ে স্কুলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেই। তখন গভর্নিং বডির সদস্য সুইটি আক্তার শিনু আমাকে নিয়ে রূপনগর থানায় যান। সেখানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোকাম্মেল আমাকে মারধর করেন এবং তৎকালীন ওসি শাহ্ আলমের রুমে নিয়ে যান। সেখানে আমি ওসি শাহ্ আলম, মোকাম্মেল এবং সুইটি ছিলেন। তখন মোকাম্মেল আমাকে বেধরক মারতে থাকেন। ওসি সাহেব আমাকে সুইটির কাছে মাফ চাইতে বলেন। আমি সুইটির কাছে মাফ চাই। উনি আমাকে গালি দিয়ে বলেন, ‘পা ধরে মাফ চা।’ আমি পা ধরে মাফ চাইলে ইন্সপেক্টর মোকাম্মেল আমাকে নিয়ে থানা হাজতে ঢোকান”,- যোগ করেন আল-আমিন।

তিনি বলেন, একই দিনে আমাকে তিন বার হাজতে ঢোকানো হয়, আবার ৩ বার বের করানো হয়। পরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে থানা থেকে ছাড়া হয়।

আল-আমিন ও তামান্নার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘থানার তদন্ত অফিসার (মোকাম্মেল) আমার ছেলেকে বলেছেন, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সারাজীবন জেলে কাটানোর ব্যবস্থা করব, নতুবা ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলব।

তিনি বলেন, বিষয়টি সুরাহার জন্য সুইটি, মোকাম্মেল ও থানার এসআই কামরুল আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। অন্যথায় হয়রানির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়। এ কথা শোনার পর আমি আমার ছেলেকে কয়েকদিনের জন্য বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেই।

এদিকে এ ঘটনায় গত ৮ জুন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার এবং মিরপুর বিভাগের ডিসি অফিসে অভিযোগ দাখিল করেন তোফাজ্জল হোসেন।

মারধর, টাকা দাবি ও মিথ্যা মামলায় ধরিয়ে দেয়ার হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে সুইটি আক্তার শিনু বলেন, এসব অভিযোগ বানোয়াট। এটা স্কুলের ব্যাপার, ছাত্রীর সঙ্গে ছাত্রীর মারামারি হয়েছে। আপনারা স্কুলে আসেন, সবার সঙ্গে জিজ্ঞেস করে রিপোর্ট করেন। এ বিষয় নিয়ে যখন তারা আমার কাছে আসে, তখন ছেলেটির (আল-আমিন) সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়, একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি পুলিশে ফোন দিলে, পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। আমার এক মামার অনুরোধে আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করিনি

রূপনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ আলম বদলি হয়ে বর্তমানে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগে রয়েছেন। থানায় মোকাম্মেল হক নামে একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যার পদবী ইন্সপেক্টর-অপারেশন্স।

হুমকির বিষয়ে ইন্সপেক্টর-অপারেশন্সের মোকাম্মেলের কাছে জানতে দুই বার তার সরকারি মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পর্কিত পোস্ট

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

রমজানে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বরিশাল

banglarmukh official

ডেভিল হান্টে গ্রেফতার আরও ৬৭৮

banglarmukh official

দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা সদস্যদের যে বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান

banglarmukh official

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে ম্যাজিক নাই: আইজিপি

banglarmukh official

১২ পুলিশ সুপারকে বদলি

banglarmukh official