বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডকে জীবিত অবস্থায় ধরতে না পেরে আক্ষেপ প্রকাশ করেছে জেলা পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় নয়ন। এরপর সকাল ১০টায় বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানেই আক্ষেপ প্রকাশ করেন এসপি মারুফ।
তিনি বলেন, নয়নকে জীবিত ধরার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা সম্ভব হয়নি। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এসপি মারুফ হোসেন দাবি করেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, রিফাত হত্যা মামলার পলাতক আসামিরা সদর উপজেলার পুরাকাটা এলাকায় আত্মগোপন করে আছে। এরপর আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টায় পূর্ব বুড়িরচর গ্রামের পুরাকাটা ফেরিঘাটের একটু দূরে চায়না প্রজেক্টের সড়কে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন আসামি পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন বন্ড নিহত হয়।
তিনি বলেন, গোলাগুলির একপর্যায়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, এসআই মো. হাবিবুর রহমান, এসআই মো. মনিরুজ্জামান ও কনস্টেবল মো. হাবিবুর রহমান আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের বরগুনা পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান ও এসআই হাবিবুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত শরীফ। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে বখাটে নয়ন ও তার সহযোগীরা রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।