অনলাইন ডেস্ক :
পটুয়াখালীর বাউফলে বিচার বঞ্চিত করার জন্য মো. ফিরোজ হাওলাদার (৪০) নামে এক ব্যক্তির দুই পা ভেঙে দুই মাস পর্যন্ত আটকে রাখেন তার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
বৃহস্পতিবার রাতে চাচা ও চাচাত ভাইদের তৈরি সেই বন্দিশালা থেকে কৌশলে পালিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে খুলে বলেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সেই নির্মম ঘটনা।
উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামে ঘটে ওই অমানবিক ঘটনা।
ফিরোজ হাওলাদার জানান, তার পিতা চান মিয়া হাওলাদার ১০ বছর পূর্বে অর্থাভাবে তাদের বসত ঘরের জমি তার চাচা শহিদ হাওলাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর ওই জমি ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য সে তার চাচা শহিদ হাওলাদারকে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।
শহিদ হাওলাদার তাকে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরালেও ওই জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। গত ১৩ মে ফিরোজ হাওলাদার বাড়ি ফিরে দেখেন সেই জমিতে তার অপর চাচা মান্নান হাওলাদারকে কবর দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি তার চাচা শহিদ হাওলাদারের কাছে জানতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে শহিদ হাওলাদার ও মান্নান হাওলাদারের দুই ছেলে আনিচ (২২) ও শামীম (২০) ক্ষুব্দ হয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দেন।
পরে স্থানীয়দের চাপে পড়ে ফিরোজ হাওলাদারের চিকিৎসা করালেও যাতে সে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে এ জন্য তার অপর চাচা নাসির হাওলাদারের ঘরে তাকে আটকে রাখা হয়। ফিরোজ হাওলাদার তার চাচা ও চাচাতো ভাইদের হাত থেকে মুক্তি পেতে একাধিকবার পালানোর চেষ্টা করলেও পালাতে পারেন নি।
ফিরোজ হাওলাদার জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি সবার অলক্ষে হামাগুড়ি দিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরোজ হাওলাদার থানার সামনের সড়কে পড়ে থাকলেও ভিক্ষুক মনে করে কেউ তার দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি কেউ।
পরে সন্ধ্যার দিকে বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর থানা থেকে বের হওয়ার সময় রাস্তার পাশে ফিরোজ হাওলাদারকে পড়ে থাকতে দেখে তার কাছে বিস্তারিত জানতে চান। এরপর ওসির কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন ফিরোজ হাওলাদার।
ঘটনা শুনে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে ফিরোজ হাওলাদারের চিকিৎসা ও আইনি সহোযোগিতার ব্যবস্থা করেন। ফিরোজ হাওলাদার বর্তমানে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। ফিরোজ হাওলাদার এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।