ফুটবল খেলা শেষে খালের পানিতে লাফিয়ে গোছল করতে গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের মোঃ ফাহাদ হাওলাদার (১৪) নামের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতের স্বজন, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, ওই ছাত্র শুক্রবার বিকেলে তার পাড়ার ছেলেদের সাথে মিলে স্থানীয় খাঞ্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলে। খেলা শেষে সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে তাদের ১৩ জনের একটি দল পার্শ্ববর্তি কালনি খালের পানিতে ডুবিয়ে গোছল করছিল। এ সময় তাদের সামনে থেকে বালু ভর্তি দুটি ট্রলার যাচ্ছিল। ছেলেরা সবাই মিলে তখন ওই ট্রলার দুটিতে উঠে পড়ে। এরপর ট্রলার দুটি গিয়ে পার্শ্ববর্তি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজদী এলাকার ও গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর বড় বাড়ির সামনে খালের কিনারে ভেড়ায়। তখন ছেলেদের দল ভেড়ানো ট্রলার দুটির ওপর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে খালের পানিতে পড়া ওঠার খেলায় লিপ্ত হয়। ওই খেলার মধ্যেই ট্রলার থেকে লাফিয়ে পড়ে উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের কাতার প্রবাসী মোঃ সিদ্দিক হাওলাদারের ছেলে ও ৬ষ্ঠ শ্রেনীর স্কুল ছাত্র মোঃ ফাহাদ হাওলাদার (১৪) নিখোজ হয়। গোছল শেষে সঙ্গী খেলোয়ারা তাদের একজনকে বন্ধুকে না পেয়ে ট্রলার চালকদেরকে ঘটনা জানায়। তখন ট্রলার দুটির চালক খালের পানিতে নেমে অনেক খোজাখুজি করেও ফাহাদের কোন সন্ধ্যান পায়নি। খবর পেয়ে এক পর্যায়ে নিখোজ ছাত্রের স্বজনরাও তার খেজে খালের পানিতে নামে। তারাও নিখোজ ছাত্রকে উদ্ধারে ব্যার্থ হয়। গতকাল শনিবার সকালে ট্রলার দুটির পাশে খালের পানিতে তার লাশ ভেসে ওঠে। এরপর এলাকাবাসী ও স্বজনা সেখান থেকে স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। থানার এসআই মোঃ আসাদুজ্জামান খান জানান, নিহত স্কুল ছাত্রের মাথায় আঘাতে ফুলে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে একটি ট্রলারের ওপর থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়তে গিয়ে স্কুল ছাত্র ফাহাদ অন্য ট্রলারটির গায়ে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে ডুবে যায়। এ কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত স্কুল ছাত্রের স্বজনরা তার লাশের ময়না তদন্ত করাতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ গোলাম সরোয়ার জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্বজনরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, খেলতে গিয়েই দুর্ঘটনায় ওই স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এ কারনে তারা লাশের ময়না তদন্ত করাতে রাজি হননি।