চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অপকর্ম, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনোর সন্ধান পেয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। এসব ক্যাসিনো থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন বলে আভিযোগ রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে।
অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ ভুইয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ক্যাসিনোর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরপরই খোঁজ মিলছে না যুবনেতা সম্রাটের। ক্যাসিনো জুয়ার মূল হোতা ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এখন লাপাত্তা।
আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বর্তমান অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। সম্রাট কোথায় এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। কেউ বলছেন সম্রাট আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের কাকরাইলস্থ কার্যালয়েই অবস্থান করছেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির খোঁজ মিলছে না কোথাও; কার্যালয়েও যাচ্ছেন না, বাড়িতেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে ব্রেকিংনিউজকে জানিয়েছেন যুবলীগের কর্মীরা। সম্রাটের কাছের লোকজনও বলতে পারছেন না তিনি কোথায় আছেন।
আবার কেউ বলছেন নিরাপদ কোনো স্থানে আত্মগোপনে আছেন। বর্তমানে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। ক্যাসিনো–কাণ্ডে অভিযুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার এ–সংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া সম্রাট ও সরকার দলীয় একজন সাংসদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী দক্ষিণ যুবলীগের ইউনিটকে ‘শ্রেষ্ঠ সংগঠন’ হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। অবৈধ জুয়া ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্রাটের জড়িত থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলেও তার বিষয়ে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি যুবলীগ। তবে এবিষয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ‘পত্র-পত্রিকা দেখছেন না? সমস্ত পত্রিকা এখন ক্যাসিনোতে ভরা। এই ক্যাসিনোর মালিকানা নাকি আমরা…. ‘খামোশ’… এটি মিথ্যা নয়। এই পত্রিকার ইনফরমেশন যদি আমরা আগে পেতাম আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাক্টিভ যাকে ধরবে তাকেই এক্সপেল্ড (বহিষ্কার) করবো।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। ফৌজদারি অপরাধে কেউ গ্রেফতার হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে যারা ফৌজদারি অপরাধে আটক হচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। আরও কাউকে পুলিশ আটক করলে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করবো।
সম্রাটকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, অ্যাকশনটা শুরুর এক সপ্তাহও হলো না। এক সপ্তাহের মধ্যে সব ব্যবস্থা হবে?