আল নাহিয়ান খান জয়কে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়ায় নিজ জেলা বরিশালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আল নাহিয়ান খান জয়ের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায়। রোববার বেলা ১১টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিশাল আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এর আগে শনিবার রাতে জয়কে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার খবরে বাবুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বরিশালের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট ও স্ট্যাটাস দিয়ে জয়কে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কেউ কেউ জয়কে অভিনন্দন জানিয়ে আঞ্চলিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে সুন্দর বিশ্লেষণ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলী খানের ছেলে আল নাহিয়ান খান জয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বরিশাল জিলা স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় জয়ের। এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করে আইন বিভাগে ভর্তি হন জয়।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে একই হল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। এরপরই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক হন জয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগে স্নাতকোত্তর বিভাগে অধ্যয়ন করছেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জয়ের পূর্বসূরিরাও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তার বাবা আব্দুল আলীম খানের হাতে বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পথচলা। বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন জয়ের বাবা। ইতোপূর্বে জয়ের ফুফু ছিলেন উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের নেতৃত্বে। তার পরিবার উচ্চশিক্ষিত এবং তাদের পরিবারের একাধিক সদস্য সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত বলে জয়ের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ নম্বর সেক্টরের অনেক কার্যক্রম জয়ের বাড়িতে পরিচালিত হতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ছাত্রলীগের স্থানীয় একাধিক নেতা জানান, গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী ২৯তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন জয়। জয়ের নাম সভাপতি পদে উঠে আসবে, এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন বরিশালবাসী। তবে সম্মেলন শেষে ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি মনোনীত করা হয়। আশাভঙ্গ হয় বরিশালবাসীর। অবশেষে জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়ায় বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হলো।

বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নেতৃত্বের কারণে সংগঠনের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলার আভাস পেয়েছিলাম। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। জয় ভালো মানুষ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তিনি ছাত্রলীগের নিবেদিত প্রাণ। ছাত্রলীগে তার অনেক ত্যাগ আছে। তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ আরও সুসংগঠিত হবে।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, জয়কে নিয়ে বরিশালবাসী গর্বিত। জয় আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় মাঠের সৈনিক জয়। তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ আরও এগিয়ে যাবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।