: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের অসহায়-গরীব এক কর্মচারীকে মামলা দিয়ে চক্রান্ত করে ফাসানোর চেষ্টা চলছে। কর্মঠ, সৎ ও পরিশ্রমী গুনাবলীর একজন সরকারি কর্মচারীকে নিয়ে চলছে মামলার ফাঁদ। এক শ্রেনীর নষ্ট চরিত্রের মানুষ তার পিছনে লেগেছে। সমাজ ও সভ্যতাকে জিম্মিকারী ওই কীট চক্র সংখ্যালঘু নারী কর্মচারীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে সম হননি। তাই তারা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সংখ্যালঘু নারী কর্মচারীকে।
শেবাচিম হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের সন্ধ্যা রানী মালী সবসময় ছিলেন কর্মঠ। তিনি উৎকোচ নিয়ে কখনো কাজ করেননি। হাসপাতালে চাকুরী হওয়ার পর থেকে সব সময় নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেন রোগীদের সেবায়।
অসহায় রোগীদের প্রতি তার উদারতা ছিল প্রচন্ড। দাপ্তরিক কার্যত্রমে নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখতেন। সেবা প্রাপ্তি হিসেবে তার কাজ থেকে সর্বাধিক সেবা নিয়েছেন রোগীরা। লেবার ওয়ার্ডে গর্ভবতী মায়েদের অন্যতম আশা-ভরসা’র প্রতিক হয়েছিলেন তিনি। অসহায়, গরিব ও নির্যাতিত গর্ভবতী মায়েরা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া মাত্রই বিছানা গুছিয়ে দিতেন সন্ধ্যা রানী। কিন্তু সম্প্রতি লেবার ওয়ার্ডে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এখন হত্যা মামলায় রুপ নেওয়ায় সন্ধ্যা রানী’র জীবনে কাল রাত্রী নেমে এসেছে। হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় ভয়ে কাপছে তিনি।
উল্লেখ্য,চলতি মাসের ২১ আগস্ট হাসপাতালের গাইনী অপারেশন থিয়েটারে(ওটি) সিজারিয়ান করার পর প্রসূতী বিউটি বেগম মৃত সন্তান প্রসব করেন। এঘটনায় বিউটির স্বামী বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেদিন ওটিতে সন্ধ্যা রানীর কোন দায়িত্বই ছিল না। তাছাড়া লেবার ওয়ার্ডের ঘটনার সময় সন্ধ্যা রানী হাসপাতালের ৪ তলায় ময়লা ফেলতে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের সরকারী
কর্মচারী সন্ধ্যা রানী মালী বলেন,“ঘটনার সময় আমি ময়লা ফেলতে ৩ তলায় যাই। কিন্তু মেডিসিন ওয়ার্ডে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় ৩ তলা থেকে ৪ তলায় যাই। পরে ময়লা ফেলে এসে জানতে পারলাম রেগীর স্বজনদের সঙ্গে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী আয়া হালিমা বেগমের ঝগড়া হয়েছে। কী কারনে হয়েছে তা আর কাউকে জিজ্ঞেস করিনি। সন্ধ্যা রানী মালী বলেন ওই দিন দেখলাম সাংবাদিক ভাইদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও পরের দিন বরিশাল থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়ও আমাকে জড়িয়ে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে। যা আদৌও সত্য নয়। প্রকাশিত এমন সংবাদে চাকুরীস্থলে আমার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
আমি এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সন্ধ্যা রানী মালী আরও বলেন সম্প্রতি বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের বার্তা পত্রিকার একটি শিরোনামে বলা হয়েছে শেবাচিম হাসপাতালে নবজাতক হত্যা মামলার আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। উক্ত সংবাদে আমাকেও জড়ানো হয়েছে। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত চার্জশীট না দেওয়া পর্যন্ত একজন আসামী তার কর্মস্থলে থাকতে পারেন। আমার কাছে ধনী আর গরীব রোগী বলতে কোন তফাৎ ছিলনা। সকল রোগীই সমান। আর রোগীদের সেবা করার জন্যেই সরকার আমাকে এখানে চাকুরী দিয়েছেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেবচিম হাসপাতালে কর্মরত একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন সিজারিয়ানের পর অনেক প্রসূতী মৃত বাচ্চা জন্ম দেন। এসব মৃত ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক প্রসূতী যদি একটি করেও মামলা করে তাহলে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও আসামী হতো। এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সৌভাগ্য অনেক শিক্ষিত মানুষ এখানে সেবা নিয়ে থাকেন। তারা জানেন সৃষ্টিকর্তার হাতেই জন্ম-মৃত্যু। চিকিৎসক কিংবা কর্মচারী হচ্ছে উছিলা মাত্র।