কিছুটা বিরল এই ঘটনাই ঘটেছে শনিবার; রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কয়েকটি গুণের কথা তুলে ধরেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
বাংলাদেশ বিষয়ে ইতিবাচক পরিকল্পনা নিয়ে গুলশানের একটি ক্লাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ‘প্রজন্ম বাংলাদেশ’ একটি সংগঠন, যেই সংগঠনের চেয়ারম্যান তার ছেলে মাহী বি চৌধুরী।
শুরুতেই মাহী জানিয়ে দেন এই অনুষ্ঠানে কোনো ‘নেগেটিভ’ কথা চলবে না। কেউ বললে সঙ্কেত দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে এক দর্শকের প্রশ্ন ছিল, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কী কোনো পজেটিভ দিক নেই?
প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পর্কে কোনো পজেটিভ কথা বলব না।
পরে বদরুদ্দোজা বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুণের কথা…। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। তারপর দেশে ফিরেছেন। দেশপ্রেম না থাকলে ফিরে আসতেন না। তার পিতার প্রতি যে অবিচার হয়েছে তার প্রতিকার তিনি করার চেষ্টা করেছেন।
“আওয়ামী লীগ অসংগঠিত একটি দল ছিল। দেশে ফিরে সেই দলকে সংগঠিত করেছেন- এটাও তার গুণ। আর হ্যাঁ, উনি ভালো ছড়া বলেন- এটা জানতাম না। গুণী মানুষ তিনি; ছড়া বলেছেন, ‘মান্না জুড়ে দেয় কান্না’।”

শেখ হাসিনা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, “পত্রিকায় দেখেছি তার আরও একটা গুণ আছে। শুনেছি তিনি রান্না করেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে রান্না করা…। তাও ইলিশ ভাপি। পত্রিকায় দেখলাম।”
এসময় মাহী খালেদা জিয়ার গুণের কথা বলতে স্মরণ করিয়ে দিলে বি চৌধুরী বলেন, “উনি গৃহিনী ছিলেন। রাজনীতি ঢুকে অবদান রেখেছেন। তাকে স্বার্থত্যাগ করতে হয়েছে। কারাবরণ করেছেন; এটাও তার রাজনীতির অংশ।
কয়েকদিন আগে কামাল হোসেনের গণফোরামের সঙ্গে বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টের ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে স্বাগত জানালেও তারা ‘অগণতান্ত্রিক পথে’ ক্ষমতায় যেতে চান বলে টিপ্পনী কাটেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দলীয় চাপে রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বদরুদ্দোজাকে এর আগে ‘বদু কাকা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।

ওই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে কয়েকদিন আগেও শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়াও ওনাকে সম্মান দেননি। ওনাকে বঙ্গভবন থেকে বের করে রেললাইনের ওপর দিয়ে দৌড় দেওয়ালো।
বি চৌধুরীর বাবার আওয়ামী লীগ করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর তাকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আপনার ডাক্তার’ নামে স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক একটি অনুষ্ঠান করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, যে অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়।
এরপর বিএনপিতে যোগ দিয়ে মহাসচিব হওয়ার পর খালেদা জিয়ার আমলে রাষ্ট্রপতি হলেও টিকতে পারেননি বি চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দিতে উঠে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের-জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন নাগরিক ঐক্যের মান্নাকে ভুল করে বিকল্প ধারার আহ্বায়ক বলেন। তখন দর্শক সারি থেকে ধরিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চের সামনে বসে থাকা বি চৌধুরী তখন বলে ওঠেন, “বিকল্পধারার আহ্বায়ক হলে সমস্যা নেই।
‘প্লান বি পজেটিভ’ শিরোনামে ওই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, বিকল্পধারার মহাসচিব এম এ মান্নান।