স্টাফ রিপার্টার//রেজয়ানুর রহমান সফেন;
আগে লিফটে উঠতে না পারায় শেবাচিম হাসপাতালে মেহেদী হাসান রানা নামে এক যুবককে বেধড়কভাবে পিটিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিচয় দেয়া দুই বখাটে। রোববার শেবাচিম হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন বøকে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত ওই যুবকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েও উগ্র মেজাজের ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি কর্তৃপক্ষ।
হামলায় আহত যুবক মেহেদী হাসান শেবাচিম হাসপাতালের সরদার মো. ইউনুস খান এর ছেলে এবং হাসপাতালের জরুরী বিভাগের অতিরিক্ত (এক্সট্রা) কর্মচারী হিসেবে কর্মরত।
আহত মেহেদী জানান, রোববার ‘ভোলায় পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা দুপুর থেকেই শেবাচিমে আসতে শুরু করে। এজন্য জরুরী বিভাগে রোগীর চাপও বেড়ে যায়। অসুস্থ রোগীদের ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে পৌছে দেয়ার কাজ করছিলেন তিনি।
মেহেদী জানায়, গুলিবিদ্ধ রোগী ওয়ার্ডে দ্রæত পৌছে দেয়ার জন্য লিফটে ওঠান। এসময় রোগীর ভিজিটর যারা তাদের সিঁড়ি পেয়ে উপরে উঠতে বলেন তিনি। তখন লিফটের অপেক্ষায় ছিলো দুই যুবক ও দুই তরুনী। তাদের আগে রোগী ওপরে ওঠার কথা বলতেই ক্ষেপে যান ওই দুই যুবক। তখন তারা দু’জন নিজেদের ইন্টার্ন ডক্টর বলে পরিচয় দেয়। এমনকি রোগী আটকে তারা চারজনই লিফটে উপরে উঠে যায় এবং ট্রলি চালক মেহেদীকে পরদিন হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে দেখা করতে বলে চলে যায়।
মেহেদী অভিযোগ করেন ওয়ার্ডে রোগী নামিয়ে দিয়ে তৃতীয় তলায় মেডিসিন বøকে লিফটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। ঠিক সেই মুহুর্তে ইন্টার্ন ডক্টর পরিচয় দেয়া উগ্র মেজাজী দুই যুবক পেছন থেকে এসেই মেহেদীর উপর হামলা চালায়। শত শত মানুষের সামনে মেহেদীকে নির্মমভাবে মাদরধর এবং মাথা দেয়ালের সাথে ধাক্কা দেয়। এসময় সেখানে রোগী নিয়ে আসা পুলিশের এক সদস্য তাদের বাঁধা দিলে তাকেও লাঞ্চিত করে তারা। এক পর্যায় পুলিশ সদস্য তার পা জড়িয়ে ধরে মেহেদীকে রক্ষা করেন। এর পর পরই ঘটনাস্থল হতে সটকে পড়ে দুই ব্যক্তি।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘ঘটনার পর পরই আত্মগোপনে চলে যাওয়া দুই যুবকের মধ্যে একজনের নাম কাজী রেদোয়ান আহম্মেদ রিজভী এবং উৎপল। এদের মধ্যে কাজী রেদোয়ান আহম্মেদ রিজভী বঙ্গবন্ধু ক্লাবের প্রোগ্রামার। অপরজনও ওই ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত বলে জানাগেছে। ক্লাবটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হামলাকারী ওই দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক উগ্রো মেজাজী। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের কারনে ক্লাব সংশ্লিষ্টরা অতিষ্ঠ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ততার কারনে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
এদিকে রোববারের ঘটনার পর পরই হাসপাতালে কর্মরত সিটিএসবি’র কর্মকর্তারা হাসপাতাল পরিচালককে বিষয়টি অবগত করেন। এসময় পরিচালক এ বিষয়ে সোমবার ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
কিন্তু রোববার বিষয়টি নিয়ে পরিচালকের সাঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার স্টাফদের সাথেতো কোন ঝামেলা হয়নি। তাছাড়া রোগীর আগে ওই দু’জনকে আগে লিফটে যেতে দিলে কি আর এমন সমস্যা হতো।
অনেকটা দায়সারাভাবে পরিচালক বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে তবে ওই দু’জনকে ডেকে জিজ্ঞাসা করে দেখব।