28 C
Dhaka
জুলাই ৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ জেলার সংবাদ বরিশাল

বরিশাল শেবাচিমে গালকাটা মামুনের তান্ডব!

স্টাফ রিপোর্টার//রেজয়ানুর রহমান সফেন:

দিন দিন বেপোয়ারা হয়ে উঠেছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বেয়াদব খ্যাত ও মাদকাসক্ত, একাধীক মামলার আসামী চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী আল মামুন মুসা ওরফে গালকাটা মামুন। একের পর এক কর্মচারী তার হাতে হামলার শিকার হচ্ছেন। কর্মচারীরা একাধিক বার পরিচালক বরাবর মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেনা হাসপাতালের পরিচালক ডা.বাকিব হোসেন।

শনিবার সকালে হাসপাতালে আসার পথে মামুন কর্তৃক লাঞ্চিত ও হত্যার হুমকিসহ মারধরের শিকার হন হাসপাতালে কর্মরত চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী তরিকুল ইসলাম (সোহাগ)। পরে স্থানীয়রা তারিকুলকে মামুনের হাত থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।

শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত প্রায় শতাধিক কর্মচারীরা অফিস সহায়ক মাদকাসক্ত ও হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী বেয়াদব আল মামুন মুসা’র দ্রুত শাস্তি সহ বদলীর দাবী নিয়ে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এবং সুষ্ট বিচারের দাবি জানিয়ে পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এসময় পরিচালক গালকাটা মামুনের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ’র মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশ্বাস দেন কর্মচারীদের।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কল্যান সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের আলী কবির, সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল আমিন,প্যাথালজী বিভাগের টেকনোলজিষ্ট বিভূতী ভুষন হালদার, ইমরান, সিকিউরিটি গার্ড মাহাসিন, সিকিউরিটি গার্ড মোমেনুলসহ মামুন কর্তৃত লাঞ্চিত ও মামলার শিকার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীরা ছিলেন।

চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল আমিন লিখন বলেন, কিছু দিন আগে আমি হাসপাতালে কর্মরত থাকাবস্থায় তখন অফিস সহায়ক আল মামুন মূসা জুনিয়র কর্মচারী হওয়া সত্বেও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি এবং শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত ও প্রাণ নাসের হুমকি দেয়। এর পর সিকিউরিটি গার্ড মোমেনুলকে মারধর করেন। তার কয়েক দিন পর জরুরি বিভাগের ট্রলি ম্যান শান্তকে মারধর করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এমন পরিস্থিতিতে কর্মস্থলে কাজ করতে গিয়ে নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ রয়েছে শতাধিক কর্মচারীর।

মামুনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন সহ সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান হামলার শিকার তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মচারীরা। একটি সূত্র জানায়, গাল কাটা মামুনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার রয়েছে এবং কি হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী মাদকাসক্ত ও শেবাচিম হাসপাতালের সরকারি ওষুধ চুরি মামলার অন্যতম আসামি ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সেফালী বেগমের মস্তান ছেলে। ওষুধ চুরির মামলার আসামী ছিলো মাদকাসক্ত গালকাটা মামুন নিজেও। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কৃপায় এজাহার থেকে বাদ পড়ে যায় গালকাটা মামুনের নাম।

এদিকে শেবাচিমে আলোচিত নিয়োগ বানিজ্যের সময় অফিস সহায়ক পদে চাকরি পায় গালকাটা মামুন। তবে যোগদানের শেষ তারিখ পর্যন্ত জেলে থাকা মামুনের যোগদান নেয়া হয় নির্ধারিত তারিখের তিন দিন পরে। অপরদিকে ওষুধ চুরি মামলার আসামী মাদকসেবী গালকাটা মামুনকে বর্তমান পরিচালক দায়িত্ব দিয়েছেন ওষুধ চোর, দালাল, পকেটমার ও ছিনতাইকারী ধরতে। তার পাশাপাশি কর্মচারীদেও মারধরে নির্দেষ দেন তিনি। তাই তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেনা পরিচালক সাহেব।

শুধু তাই নয়, পরিচালকের নিরবতার কারণে মামুন ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সে হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র কর্মচারীদের একের পর এক লাঞ্চিত করছে। রেহাই পাচ্ছে না পদস্থ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাও। এসব কারনে হাসপাতালের সকল পর্যায়ের কর্মচারীরা গালকাটা মামুনের বিরুদ্ধে ফুলে উঠে দাড়িয়েছে। মামুনের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারীরা বলেন, গালকাটা মামুন শুধু কর্মচারীদের মারধরই করেনা সে হাসপাতাল চক্রে মাদক ব্যানিজ্যর সাথে জড়িত রয়েছে। একজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হয়ে ডাক্তার থেকে শুরু করে নার্স,কর্মচারীরা তার হাতে লাঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। পরিচালকের কাছে রয়েছে তার বিরুদ্ধে হাজারও অভিযোগ। তার পরও তিনি মামুনকে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে।

তবে এবার মামুনের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা না নিলে কঠোর অন্দোলনের নামবে কর্মচারীরা। যদিও হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন আগেই জানিয়েছিলো, মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা। মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা সহ শান্তিমুলকভাবে বরগুনায় বদলীর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফল না ঘটায় কর্মচারীদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার সকালে কর্মচারী তরিকুল ইসলাম (সোহাগ) কে মারধর ও লাঞ্চিতর করার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এবার তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এতো দিন আমি কোন কর্মচারীকে বদলী করিনি। এবার আমি আমার অন্য কর্মচারীদের দিকে তাকিয়ে তাকে বদলী করবো।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official