মে ১৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অন্যান্য জাতীয়

ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

ক্ষুধা দূর করার ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ আরও এগিয়েছে। গত তিন বছর ধরেই ক্ষুধা দূরীকরণে বাংলাদেশ ধারাবাহিক উন্নতি করেছে। চলতি বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ ১১৭টি দেশের মধ্যে ৮৬ তম। গতবারের চেয়ে বাংলাদেশ দুই ধাপ এগিয়েছে। তবে দেশে ক্ষুধা পরিস্থিতি এখনো গুরুতর, ৩৬ লাখ মানুষ মারাত্মক ক্ষুধাঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।

২০১৮ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে এই চিত্র উঠে এসেছে। খাদ্যনিরাপত্তা–বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানভিত্তিক সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে ক্ষুধার সংজ্ঞা নির্ধারণে চারটি সূচককে আমলে নেওয়া হয়েছে। অপুষ্টি, খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা, কৃশকায় বা শীর্ণকায় শিশু ও শিশুমৃত্যুর হার।

চলতি মাসে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে ক্ষুধা সূচকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা তিন দেশ হলো বেলারুশ, বসনিয়া হারজেগোভিনা ও চিলি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে মধ্য আফ্রিকা, চাদ রিপাবলিক ও ইয়েমেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষুধা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। ২০১৬ সালে ভারতের অবস্থান ছিল ৯৭ তম। চলতি বছরে তা ১০৩ নম্বরে নেমে এসেছে। পাকিস্তানের অবস্থানেরও কোনো উন্নতি হয়নি। তিন বছর ধরে দেশটি ১০৬ নম্বর অবস্থানেই আছে। আর গত দুই বছরে বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৮ কোটি থেকে বেড়ে ১২ কোটি ৪০ লাখে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হচ্ছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনো’।

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রথম পাঁচ বছরে অগ্রগতির ধারা বেশি ছিল। কিন্তু পরের পাঁচ বছরে সেই গতি কিছুটা স্তিমিত হয়ে এসেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে।

যেমন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এরা বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বড় সমস্যা তৈরি করেছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে বাংলাদেশে বন্যার কারণে ব্যাপক ফসলহানি হয়। এতে চালের দামও বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের সমস্যাও খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের কোনো খাদ্য সমস্যা নেই। কেউ ক্ষুধার্ত নেই। অপুষ্টিজনিত কিছু সমস্যা আছে, আমরা এখন তা দূর করতে প্রাথমিকভাবে দেশের ২০টি উপজেলায় পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল দেওয়া শুরু করেছি। ধীরে ধীরে তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেব। আশা করি, আমরা দেশ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অপুষ্টি দ্রুত দূর করে ফেলব।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বরিশাল ও কক্সবাজার অঞ্চলে ৩৪ লাখ মানুষ মারাত্মক ক্ষুধা নিয়ে বসবাস করে। তারা জলবায় পরিবর্তনের কারণেও হুমকিতে আছে। এই দুই এলাকার মানুষ নিয়মিতভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে। একই সঙ্গে ওই এলাকায় কর্মসংস্থানের পরিমাণও কম।

বর্তমানে ক্ষুধার্ত মানুষের হার আশানুরূপভাবে না কমার কারণ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্য কমছে। কিন্তু সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো অনেক বেশি বড় অবকাঠামোনির্ভর। এতে প্রবৃদ্ধি অনুযায়ী ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমছে না। উন্নয়ন উদ্যোগগুলোর মধ্যে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যবিমোচনের সুযোগ রাখতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official