তানজিম হোসাইন রাকিবঃ
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে ধর্ষন। আইন সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে,দেশে চলতি বছর প্রথম ৯ মাসে ৯৭৫ জন নারী ও শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষনের পর ৪৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে।এ তথ্য খুবই উদ্বেগজনক।
সিলেটে এম.সি কলেজে নববধুকে গনধর্ষন এর পরই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগের কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতন, এর রেশ কাটতে না কাটতেই ১৩ বছরের স্কুল ছাত্রীকে গনধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে খোদ রাজধানীতে। পল্লবির ১২ নম্বর সেকশনের বালুর মাঠ কুর্মিটোলা বস্তিতে তৃতীয় শ্রেনীর ওই শিক্ষার্থীকে পাশবিক নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হয়নি ধর্ষকরা। বরবরোচিতের কান্ডের পুরো দৃশ্য তারা ধারন করে মোবাইল ক্যামেরায়। ঐ দৃশ্য ইন্টারনেটে ভাইরাল করার কথা বলে ফের ধর্ষন করতে চায় স্থানীয় বখাটেরা। সব ঘটনা লিখতে গেলে পুরো পাতা শেষ হয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন করা দেশে দিন দিন ধর্ষনের মত ন্যাক্কার জনক ঘটনা যে হারে বেড়ে চলছে তাতে এ দেশ বেশ কিছু দিনের মধ্যে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পরবে।সঠিক সময়ে রুখে না দাড়ালে এটি মরন ব্যাধির রুপ নিবে। তাই সকলের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে এ মরনব্যাধি রুখে দাড়ানোর চেষ্টা করা। নয়ত কালকে আপনার বড় একটা ক্ষতি হবে না এ গ্যারান্টি কোনো ভদ্রলোক আপানাকে দিবে না।
ধর্ষন কী?
ধর্ষন এক রকম যৌন অত্যাচার। নারী পুরেষের কর্তৃক ধর্ষনের শিকার হতে পারে আবার পুরুষ নিজেও নারী কর্তৃক ধর্ষনের শিকার হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচার পরিসংখ্যান ব্যুরোর (১৯৯৯) হিসাব অনুসারে সেদেশের ধর্ষিতার মধ্যে ৯১ শতাংশ মহিলা ও ৯ শতাংশ পুরুষ। এবং ৯৯ শতাংশের ক্ষেত্রেই অপরাধী পুরুষ।
ধর্ষন কেন হয়?
বিচারহীনতা সংস্কৃতির কারনে ধর্ষন বাড়ছে। তাই ধর্ষনের ব্যাপারে আইনের কঠোর প্রয়োগের ব্যাবস্থা করতে হবে। অপসংস্কৃতি আর ভিনদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন ধর্ষন রোধের অন্তরায় মনে করা হয়।
ধর্ষন রোধের উপায় কি?
সবার আগে দেশের আইনের পরিবর্তন আনতে হবে। ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যৌন নির্যাতন বন্ধের আগে মানুষিকতা বদলাতে হবে। ধর্ষন বন্ধ করতে হলে আগে পুরুষের মধ্যে মানবিক গুনাবলী জাগ্রত করতে হবে।ধর্ষন রোধে আমাদের সচেতন হতে হবে। অবাধ মেশামেশির সুযোগ, লোভ লালসা-নেশা উচ্চবিলাস পর্নো-সংস্কৃতির নামে অশ্লীল নাচ-গান, যৌন সুড়সুড়ি মুলক বই –ম্যাগাজিন, অশ্লীল নাটক সিনেমা ইত্যাদি কামোত্তেজনা মানুষকে প্রবলভাবে ব্যাবিচারে প্রচিত করে বর্জন করতে হবে। পর্নো সাইট গুলো বন্ধ করতে হবে যেন মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে তা কেউ দেখতে না পারে। নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। সময়মত বিয়ের ব্যাবস্থা করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করতে হবে।বাজে সঙ্গ ও নেশা বর্জন করতে হবে।
পাশাপাশি নারীকেও শালীন হতে হবে। যৌন উত্তেজক পোশাক বর্জন করতে হবে।প্রবল কামোত্তেজনা মানুষকে পশুতুল্য করে ফেলে।
দেশ ও জাতিকে বাচাতে হলে ধর্ষন বন্ধে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। সবার একত্রিত চেষ্টাই পারবে ধর্ষন বন্ধ করতে এবং দেশ ও জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে।
তানজিম হোসাইন রাকিব
যুগ্ন বার্তা সম্পাদক, বাংলার মুখ ২৪.কম
বার্তা সম্পাদক, দৈনিক বরিশাল সংবাদ।