27 C
Dhaka
জুলাই ৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় রাজণীতি

খালেদা জিয়া অপরাধী নন, বললেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর (ভিডিও)

 রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাবন্দী রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর। তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় প্রধানকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া মানে সেই দলকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়া। একটি দলের প্রধানকে কারাগারে পাঠিয়ে ক্ষমতাসীনরা অন্য সব বিরোধীদের সতর্ক করে দিয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।’

গত সোমবার একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নূর বলেন, রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও উদারতার জায়গা থেকে খালেদা জিয়াকে সরকারের মুক্তি দেয়া উচিত।
এমন সব মন্তব্যের পেছনে ভিপি নূরের যুক্তি, ‘যেখানে খালেদা জিয়ার মতো এতো বড় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জেলে রাখার পরও দেশে এ নিয়ে দুর্বার কোনো আন্দোলন হয়নি;তাহলে আমার মতো ভিপিকে কোনো মামলায় গ্রেফতার করে জেলে ঢোকালে তেমন কিছুই হবে না।’

এমন বার্তা বা হুমকি তাকেও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে খালেদা জিয়ার কারাভোগের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির ব্যর্থতাকে দায়ী করলেন ভিপি নূর।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রধানকে মুক্তির বিষয়ে দলটির নেতাকর্মীরা সেভাবে আন্দোলন করতে পারেনি। আন্দোলন মানে রাজপথ উত্তেজিত করা নয়, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া নয়। আন্দোলনের নানা কৌশল আছে। অনেক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আছে।’ খালেদা জিয়াকে মুক্তি করতে সেসব কৌশলের কোনোটাই বিএনপির নেতাকর্মীরা নিতে পারেনি বলে নূরের মন্তব্য।

তিনি বলেন, ‘তারা বলে আমার নেত্রী আমার মা, বন্দী হতে দেব না। কিন্তু যখন খালেদা জিয়া বন্দী হচ্ছিলেন তখন তারা সেভাবে আন্দোলন করতে পারেনি। তারা যদি তাদের নেত্রীকে ভালোবাসেন তবে সেদিন তারা নিজেরাও থানার সামনে গিয়ে শুয়ে পড়ে বলতো যে, আমাদেরও গ্রেফতার করো। পুলিশের মার খেয়ে গণগ্রেফতার হতেন তারা। মানুষ দেখতো। কিন্তু সেটি তারা করেনি।’

নূর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় বিএনপির দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতা মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন বিএনপির আমলে রাজপথে পুলিশের হাতে মার খেয়েছে। শাড়ি ধরে টেনেছে। এখন সেসব ঘটনার প্রতিশোধ নিতে থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ কি? এই দুই বড় বিরোধী দলের হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতিতে সাধারণ মানুষ ভুক্তোভোগী হচ্ছে।’ এই নোংরা মানসিকতার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি।

নুর বলেন, ‘এখন এমন হয়ে গেছে রাজনীতিবিদরা আর দেশের মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করছেন না। বিশেষকরে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতারা ক্ষমতায় গেলে তারা ব্যস্ত কে এমপি হবেন, কে মন্ত্রী হবেন, কে ফ্ল্যাট কিনবেন, কে বাইরে জায়গা-জমি করবেন, কে বিদেশে বাড়ি বানাবেন! তৃণমূলেও একই ব্যাপার ঘটছে। রুট লেভেলের কর্মকর্তারা কেউ বাসকাউন্টার খাবে, কেউ মাছঘাটের ইজারা নেবে, কেউ গরুমহিষের হাটের ইজারা নেবে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন সব বাণিজ্যিক বিষয় ঢুকে পড়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে এসব বাণিজ্যিক বিষয় প্রভাব ফেলছে।’
নূর বলেন, ‘ছাত্র সংগঠন হিসেবে যেসব কাজ করা দরকার ছাত্রলীগ সেগুলো থেকে অনেক পিছিয়ে গেছে। তারা এখন শুধু তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেমেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেখেছি হাতুড়ি বাহিনী, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে হেলমেট বাহিনী দেখেছি। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরাব হত্যার ঘটনা দেখেছি। আমরাও ছাত্রলীগের অহরহ হামলার শিকার হয়েছি সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এই ছাত্রলীগের কত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ যথেষ্ঠ প্রশংসনীয়। ছাত্রলীগ বর্তমানে আর সেই অবস্থানে নেই।’
তবে সাধারণ মানুষ ও ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ নয় বলেই ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের মাধ্যমে নিপীড়িত হচ্ছে বলে মনে করেন ভিপি নূর।

সাধারণ মানুষ প্রতিবাদী ও ঐক্যবদ্ধ হলে এমনটা হতো না জানিয়ে তিনি উদাহরণ দেন, ‘বুয়েটে যেসব ছাত্রলীগ কর্মীদের দাপটে টেকা যেত না, আবরার হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এখন সেখানে ছাত্রলীগের নামও মুছে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নাম মুখে দেয়া আমাদের লক্ষ্য না, আমি বলতে চাচ্ছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছাত্ররা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, প্রতিহত করতে শেখে তাহলে ছাত্রলীগ

বা অন্য কোনো সংগঠন যারাই হোক না কেন তাদের মোকাবেলা করা অসম্ভব কিছু নয়। বরং সাধারণ ছাত্রদের এমন প্রতিবাদ দেখে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা নিজেদের চরিত্রে পরিবর্তন আনবে। তাদের নিপীড়ন চরিত্র, টেন্ডাবাজি চরিত্র বন্ধ হবে। শিক্ষককে জিম্মি করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আসবে।’

 

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official