এপ্রিল ২৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ

প্রথমে শাওনকে আঘাত পরে শামসুন্নাহারকে হত্যা করে জনি

রাজধানীর কাকরাইলে মা শাহসুন্নাহার ও ছেলে শাওনকে ‘হত্যাকারী’ আল আমিন ওরফে জনিকে গোপালগঞ্জের মোকছেদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। পরে র‌্যাবের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে জনি। বোনকে সুখী দেখতে তিনদিন আগে সে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেরর ভিত্তিতে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, চার বছর আগে অভিনেত্রী শারমিন মুক্তার সঙ্গে বিয়ে হয় আবদুল করিমের। বর্তমানে মুক্তা তার মা ও ভাই জনিকে নিয়ে পল্টনের একটি বাসায় থাকেন। করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পর করিমও তাদের সঙ্গে থাকতেন।

মুফতি মাহমুদ বলেন, বিয়ের পর থেকে করিম ও মুক্তার মধ্যে বিভিন্ন আর্থিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। করিমের অধিকাংশ সম্পত্তির মালিক প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার হওয়ায় এ নিয়ে মুক্তার মধ্যে অসন্তোস ছিল। প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের প্ররোচনায় তিন-চার মাস আগে তৃতীয় স্ত্রী মুক্তাকে তালাকের প্রক্রিয়া শুরু করেন করিম। এ কারণে সম্প্রতি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন মুক্তা। বোনের স্বার্থ বিবেচনায় পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী শামসুন্নাহারকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় জনি।

জনি র‌্যাবকে জানায়, ঘটনার আগের দিন ৩১ অক্টোবর নিউমার্কেট থেকে ১১০০ টাকায় ১১ ইঞ্চির একটি ছুরি কিনেন। ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের বাসায় ঢুকে শামসুন্নাহারের ছোট ছেলে শাওনকে ছুরিকাঘাত করে চুপ করে বসে থাকতে বলেন। পরে শামসুন্নাহারকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। তখন শাওন এগিয়ে গেলে তার গলাতেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে জনি। পরে শাওন দৌড়ে নিচে নামতে চাইলে জনি তাকে থামতে বলেন। জখমপ্রাপ্ত শাওন হঠাৎ চতুর্থ তলার সিড়িতে পড়ে যায়। ‘অপেশাদার খুনি’ জনির ছুরিকাঘাতের সময় দুটি আঙ্গুল কেটে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ থেকে ভুয়া নাম এন্ট্রি করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয় জনি।

এদিকে ঘটনার কিছুক্ষণ পর উপরে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনে যখন দারোয়ান উপরে যাচ্ছিল, হত্যা করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় জনিই দারোয়ানকে বলেন, উপরে মারামারি হচ্ছে। দারওয়ানকে জনির ছবি দেখানো হলে সে তাকে শনাক্ত করে।

মুফতি মাহমুদ জানান, জনি আগে থেকেই একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ব্যাগে করে জামা-কাপড় রেখে যায়। সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত পোষাক পরিবর্তন করে ভিন্ন নামে ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। তারপর ঢাকাতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন এবং পরে গোপালগঞ্জে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় করিম ও মুক্তা জড়িত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, খুনের পরিকল্পনায় তারা জড়িত কিনা আমরা এখনো জনতে পারিনি। তদন্তের পর তা বেরিয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যায় কাকরাইলের ভিআইপির রোডের ৭৯/১ নম্বর বাসার গৃহকর্তা আবদুল করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও তার ছেলে শাওনকে (১৯) গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল করিম ও তার তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে হত্যা মামলা দায়ের করে ‘পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official