মে ১২, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ প্রশাসন রাজণীতি

হামলার সময় হেলমেট পরার নির্দেশ দিয়েছিলেন নেতারা

রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের উপর হামলার সময় পরিচয় এড়াতে হামলাকারীদের হেলমেট পরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন নেতারা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে লাঠি মজুদ ছিল এবং সেসব লাঠি দেখিয়ে কর্মীদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন কয়েকজন নেতা।

হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল পুলিশকে উসকানি দেওয়া। তারা ভেবেছিল এ ঘটনায় পুলিশ অ্যাকশনে যাবে এবং নির্বিচারে লাঠিচার্জ করবে। আর সেসব ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে দলটি রাজনৈতিক ফায়দা লুটবে।

মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ১১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী এইচ কে হোসেন আলী, শাহজাহানপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ ভূঁইয়া, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্বাস আলী, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রবিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন উজ্জ্বল ও তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাহাবুবুল আলম।

তিনি বলেন, এইচ কে হোসেন আলী হেলমেট পড়ে গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে উঠে লাফিয়েছিলেন, সোহাগ লাঠি হাতে গাড়ি ভাংচুর করে ও শার্ট খুলে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলেন, আব্বাস খালি গায়ে উন্মত্বতা প্রকাশ করে গাড়ি ভাংচুর করেন, আশরাফুল পুলিশের পিকআপে প্রথম আঘাত করেন, জাকির ও মাহবুবুল উপস্থিত থেকে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা দেন।

এর আগে আরও সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরা সবাই এজাহারনামীয় আসামি। যারা অজ্ঞাত ছিল তাদেরও মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজের সহায়তায় শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, সেদিন যখন হামলা করা হয় তখন কোনো কোনো নেতারা তাদেরক হেলমেট পরে যেতে বলেছেন, যাতে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া না যায়। লাঠিও ওখানে আগে থেকেই জড়ো করা হয়েছিল, কেউ কেউ লাঠি নিয়ে যেতে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে তাদের কাউকে কাউকে শনাক্ত করা হয়েছে আবার কাউকে শনাক্ত করার কাজ চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, সেদিন যে ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল সেটি ফৌজদারী অপরাধ। ফৌজদারী অপরাধ বিবেচনায় নিয়েই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, এখানে কারও রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়।

যে যুবক গাড়িতে আগুন দিয়েছে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে পারলেও এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এর বাইরেও অনেককে শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঘটনার দিন পুলিশ কোনো অ্যাকশনে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশ ইসির নির্দেশে কাজ করতে বাধ্য। সেদিন পল্টনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। ৫-৭ মিনিটে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে ডিএমপির ক্যাপাসিটি রয়েছে। সেদিন পুলিশ অ্যাকশনে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলে ৫-১০ মিনিটে সবাইকে সরিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে।

তিনি বলেন, অনেক পুলিশকে সেদিন আক্রমণ করা হয়েছিল, আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের লাইফ রেসকিউ করাই সেদিন বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, আমরা সেটি করতে পেরেছিলাম।

হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য, তদন্ত ও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল পুলিশকে উসকানি দেওয়া। তারা মনে করেছে এর ফলে পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করবে এবং এসব অ্যাকশনের ছবি দেখিয়ে বিভিন্ন মহলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবে।

দ্যা ইকোনোমিস্টের একটি রিপোর্টে লেখা হয়েছে- সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত নাশকতা করবে এবং তাদের ব্যাকআপ দেবে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা সব রাজনৈতিক দলের শুভবুদ্ধি হবে। সবাই গণতান্ত্রিক পন্থায় তাদের দাবি-দাওয়া আদায় করবেন। কিন্তু কেউ যদি নাশকতা করার চেষ্টা করে, সে যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। পল্টনের ঘটনায় আসামিরা ফেসবুকের অ্যাকাউন্টও ডিঅ্যাকটিভেটেড করেছিল, তবুও তারা পালাতে পারেনি। অপরাধ করে কেউ পালাতে পারবে না।

জনগণের জান-মাল ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো ফৌজদারি অপরাধ নস্যাৎ করার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে বলে জানান তিনি।

পল্টনের ঘটনায় পুলিশের উপর হেলমেট পরিহিত হামলাকারীদের দ্রুতই গ্রেফতার করা হলো, সেই সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট সাংবাদিকদের উপর হেলমেটধারী হামলাকারীদের কেন এখনও শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়নি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফৌজদারী অপরাধ হলে সেটিকে আমরা অপরাধ হিসেবেই দেখি, কার উপর হামলা হয়েছে বিষয়টি মুখ্য নয়। এই মামলাটির তদন্ত চলছে, দায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official