বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম। আজ সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশনায় প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘প্রথমে রিটার্নিং কর্মকর্তা আমার প্রার্থিতা বাতিল করে। আপিল করলে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) প্রার্থিতা বাতিল করেছিল। পরে হাইকোর্টে আপিল করলে আজ হাইকোর্ট আমার প্রার্থিতা গ্রহণের জন্য ইসিকে নির্দেশ দেন ও আমাকে প্রতীক বরাদ্দেরও নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় (বগুড়া-৪) গিয়ে প্রচারণা চালাব।
বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী মোশারফ হোসেন এবং আওয়ামী লীগ–সমর্থিত জাসদের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন।
হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন,‘ মার্কা দেখে ভোট দেওয়ার দিন শেষ। মার্কা বা দল কোনো ফ্যাক্টর নয়। ব্যক্তিই ফ্যাক্টর। নির্বাচনী মাঠে ব্যক্তি হিসেবে আমিই জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ও শক্তিশালী প্রার্থী। ভোটারেরা সঙ্গে থাকলে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
২ ডিসেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে আপিলেও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পাটির ‘লাঙ্গল’ মার্কায় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হিরো আলম । এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গত ২৮ নভেম্বর নন্দীগ্রাম উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মোছা. শারমিন আখতারের কাছে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা দেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি আলোচনায় আসেন। তিনি ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান।
২০১৬ সালে হিরো আলমের সঙ্গে ছবি তুলে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এরপর বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো হিরো আলমকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদন জগতের তারকা বলে উল্লেখ করা হয়।
গুগলে কাকে সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়, তার একটি তালিকা করে ইয়াহু ইন্ডিয়া। জরিপে দেখা গেছে, ‘সুলতান’ ও ‘দাবাং’ তারকাখ্যাত সালমান খানের চেয়েও বেশিবার খোঁজা হয়েছে হিরো আলমকে।
সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিল্পী ও ভক্ত হিরো আলমের ভাস্কর্য তৈরি করেন।