34 C
Dhaka
জুলাই ১২, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ প্রচ্ছদ বরিশাল

মাকে বিয়ে করতে মেয়েকে অপহরন

বরিশালের কাউনিয়া থানা পুলিশের অভিযানে অপহৃত ৬ বছরের এক শিশু উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার সকালে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার দাসের জঙ্গল নামক গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত শিশুর নাম শিলা। গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার নগরীর বেলতলা চরআবদানী থেকে শিশু শিলাকে অপহরণ করা হয়েছিল।

থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে মা পারভীন আক্তারের সাথে বরিশালের বেলতলা চরআবদানি মামার বাসায় আসে শিলা। আসার সময় লঞ্চে বসে নুর ইসলাম (৩৫) নামের ওই অপহরণকারীর সাথে পরিচয় হয় শিলার মা পারভীনের। লঞ্চে বসে শিশু শিলাকে ডিম, চানাচুর, লজেন্স কিনে দেয় নুর ইসলাম। বরিশাল ঘাটে আসার পর বাসায় যাওয়ার ভাড়া টাকা না থাকায় নুর ইসলাম তাকে অটোযোগে বেলতলায় নিয়ে আসে। ভাড়া দেওয়ার পরপরই নুর ইসলাম পারভীনের কাছে ভাড়া ও লঞ্চে খাওয়ানো বাবদ টাকা দাবী করে।

এ সময় পারভীন তাকে ভাইয়ের বাসায় নিয়ে যায় এবং দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু অপহরণকারী নুর ইসলাম তাকে বিয়ে করবে বলে জানিয়ে সেখানেই বসে থাকে। এক পর্যায় পারভীন শিশু শিলাকে ঘরে রেখে পাশের ঘরে যায়। এ সুযোগে নুর ইসলাম শিশু শিলাকে মজা কিনে দিবে বলে তাকে নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে।

এর ১০ মিনিট পরেই নুর ইসলাম শিলার মা পারভীনকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে বলে, আমার সাথে বিয়ে না বসলে কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পাবে। ৩০ মিনিট পর শিশু শিলাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার মা। এরপর থেকে নুর ইসলাম তার মুঠোফোন বন্ধ করে রাখে। পরে সন্ধ্যার দিকে কাউনিয়া থানায় এসে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন পারভীন।

পরে কাউনিয়া থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাক করে নুর ইসলামের অবস্থান শরীয়তপুরে বলে নিশ্চিত হন। ওই দিন রাতেই উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাহাঙ্গীর মল্লিকের নির্দেশনায় শিলার মা পারভীনকে সাথে নিয়ে এসআই জসিম, এসআই হাবিব, এএসআই ফিরোজ আলম, এএসআই হুমায়ুন ও এএসআই হালিমসহ একটি টিম শরীয়তপুরে যান। সেখানে গিয়েও প্রতিনিয়ত মোবাইল ট্র্যাক করে অপহরণকারী নুর ইসলামের অবস্থান শনাক্ত করে ছদ্মবেশে সম্ভাব্য এলাকায় অভিযান চালায় তারা।

এরপর ৮ আগস্ট দুপুরে পুনরায় অপহরণকারী নুর ইসলামের মুঠোফোনে (নাম্বার ০১৮ .৮২০) কল দিয়ে পারভীন তাকে বিয়ে করার কথা জানায়। এ সময় পারভীনকে শরীয়তপুর বাসস্ট্যাণ্ডে আসতে বলে নুর ইসলাম। সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রায় ঘন্টা দুই পর নুর ইসলাম ফোন করে পারভীণের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণ না দিলে শিশু শিলাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অপহরণকারী। বাধ্য হয়ে নুর ইসলামকে ৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছিল।

কিন্তু চতুর নুর ইসলাম টাকা পাওয়ার পরপরই মুঠোফোন বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়টি তাৎক্ষণিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তাদের নির্দেশে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণকারীর মামা শ্বশুর বাবুল মোল্লাকে আটক করে তাকে সাথে নিয়ে এবং গোসাইরহাট থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রামে গ্রামে টানা তিন দিন তল্লাশী চালায় এবং স্থানীয়দের অপহরণের বিষয়টি জানায় অভিযানে থাকা দলটি। তবে যে সিম দিয়ে অপহরণকারী মুক্তিপণ দাবী করে তা রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকায় তার পূর্ণ পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।

কাউনিয়া থানা পুলিশ শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানা পুলিশের সহযোগিতায় দাসের জঙ্গল গ্রামে পুনরায় অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে গতকাল সকাল ৭টায় শিশু শিলাকে উদ্ধার করে। শিশু শিলা তার মায়ের সাথে কাউনিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় ৯ আগস্ট রাতে কাউনিয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছে শিলার মা পারভীন।

পুলিশ জানিয়েছে অপহরণকারী নুর ইসলাম পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে শিশু শিলাকে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। তাছাড়া পুলিশ গোসাইরহাট গ্রামে গিয়ে জানতে পেরেছে অপহরণকারী এরপূর্বে দুটি বিবাহ করলেও সেখানে তার নাম থাকলেও পিতা-মাতা কিংবা ঠিকানা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official