চাকরি দেয়ার কথা বলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে এ মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ‘যুগবাণী সমাজকল্যাণ’ এনজিওর এরিয়া ম্যানেজার তানজিরু হাসান জীবন ও তার অফিসের নারী স্টাফ আফিয়া বেগম।
এরই মধ্যে ধর্ষণচেষ্টায় সহযোগিতা করায় দুই নম্বর আসামি আফিয়া বেগম (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি দেলদুয়ার উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম রুবির স্ত্রী।
বধবার দুপুরে ওই কলেজছাত্রী টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মির্জাপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামাদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কয়েকদিন আগে ‘যুগবাণী সমাজকল্যাণ’ এনজিওর এরিয়া ম্যানেজার তানজিরু হাসান জীবনের সঙ্গে টাঙ্গাইলে যাওয়ার সময় বাসে ওই কলেজছাত্রীর পরিচয় হয়।
পরিচয় হওয়ার পর জীবন নিজেকে ব্যাংক এশিয়ার বড় কর্মকর্তা পরিচয় দেন। পরে কলেজছাত্রীকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ফোন নম্বর নেন জীবন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে যোগাযোগ বেড়ে যায়। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অফিসের স্টাফ আফিয়াকে দিয়ে ওই ছাত্রীকে অফিসে ডেকে নেন জীবন। অফিস কক্ষে জীবন ছাড়া অন্য কেউ না থাকায় ছাত্রীর সন্দেহ হয়।
এ সময় অফিস কক্ষ থেকে বের হতে চাইলে ছাত্রীর হাত ধরে টানাহেঁচড়া এবং কক্ষের দরজা আটকে দেয়ার চেষ্টা করেন জীবন। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী কক্ষ থেকে বের হয়ে নিচে নেমে দোতলার গেট বন্ধ পান।
ওই সময় ছাত্রীর পিছু নেন জীবন। সেই সঙ্গে জীবনের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন ছাত্রী। এ অবস্থায় সম্ভ্রম বাঁচাতে দোতলা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে আত্মরক্ষা করলেও গুরুতর আহত হন ছাত্রী। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার পর জীবন পালিয়ে যান।
দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ায় ছাত্রীর কোমরের হাড় ভেঙে গেছে বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিথুন রায় জানিয়েছেন। ওই ছাত্রী এ বছর টাঙ্গাইল কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বাসাইল উপজেলার সাদীহাটী গ্রামের তানজিরু হাসান জীবন ও আফিয়া বেগমকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আফিয়াকে পাকুল্যা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মির্জাপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামাদ বলেন, গ্রেফতারকৃত আফিয়া বেগমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কলেজছাত্রী।