28 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জেলার সংবাদ

গোলাপি বেগমের লাশ দাফনের একদিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে!

রাজশাহীর বাঘায় মবিল মাখানো গোলাপি বেগমের লাশ দাফনের একদিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে আড়ানী রেলস্টেশন থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। গোলাপি বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছেন। এখন এলাকাবাসীর প্রশ্ন- ওই অজ্ঞাত নারীর লাশটি কার?

জানা যায়, ১০ জুন সন্ধ্যায় বাঘা থানার পুলিশ চকবাউসা গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখে মবিল মাখানো অজ্ঞাত পরিচয়ে (৪৫) এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। পর দিন মঙ্গলবার ওই লাশের পরিচয় মেলে। তিনি উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পাঁচপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মনির হোসেনের স্ত্রী গোলাপি বেগম।

বুধবার সকাল ১০টায় আড়ানী রেলস্টেশন থেকে গোলাপি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। সেখানে গোলাপি বেগমের মামা শাকিব হোসেন, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ভাসুর মাজদার রহমান, জা সাজেদা বেগমের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসল গোলাপি বেগমকে শনাক্ত করা হয়।

তার জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের সঙ্গে মিল রয়েছে। পরে চেয়ারম্যান গোলাপি বেগমসহ উভয় পরিবারকে থানায় পাঠিয়ে দেন।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগম বলেন, ঈদের আগে ২৯ মে রুস্তমপুর হাটে ৪২ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করি। এ টাকা নেয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাপ দিতে থাকে। আমি নিরুপায় হয়ে পর দিন বিদ্যুৎ বিল দেয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাজশাহীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাই।

আমি ছয় বছরের সন্তান মারুফ হোসেন ও পেটের ৫ মাসের সন্তানের কথা ভেবে বুধবার সকালে রাজশাহী থেকে মহানন্দা ট্রেনে আড়ানী স্টেশনে আসি। এ সময় স্থানীয় কিছু মানুষ আমাকে চিনতে পেরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে। সেখান থেকে থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগমের ভাসুর মাজদার রহমান বলেন, গোলাপি বেগম বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আমি বাদী হয়ে ১ জুন বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। মুখে মবিল মাখানোর কারণে সঠিকভাবে লাশটি চিনতে পারিনি।

আড়ানী পৌর নারী কাউন্সিলর ও পাঁচপাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম বলেন, প্রায় চার মাস আগে গোলাপি বেগম ছয় বছরের ছেলেসন্তান মারুফ হোসেনকে রেখে এক যুবকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে চলে যায়। গোলাপি বেগমের স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পুনরায় তাকে বুঝিয়ে স্বামীর বাড়িতে আনে।

গোলাপি বেগমের শ্বশুর বিচ্ছাদ আলী বলেন, আমার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গোলাপি নিজের ইচ্ছামতো চলাফেরা করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন কথা শোনায়। ফলে আমরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকি।

এর মধ্যে আমার ছেলে ও নানিকে রেখে চলে গিয়েছিল। ১২ দিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে। তবে চকবাউসা গ্রামের লালু প্রামাণিকের ভুট্টাক্ষেতে যে লাশ পাওয়া যায়, সেটি অন্য কারও।

আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, গোলাপি বেগমসহ উভয়পক্ষ আমার কাছে এলে, তাদের থানায় পাঠাই। তবে আত্মীয়স্বজনের কাছে জেনে এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মনে হয়েছে, তিনি আসল গোলাপি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি মহসীন আলী জানান, উদ্ধারকৃত লাশটি ভুলভাবে তার আত্মীয়রা শনাক্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পারিবারিক গোরস্তানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে। তবে উদ্ধারকৃত লাশের মুখে পোড়া মবিল দেয়া ছিল। এ ছাড়া লাশের পাশ থেকে একটি কালো বোরকা, এক জোড়া সেন্ডেল, একটি গুলের কৌটা পাওয়া যায়। লাশের গলা ওড়না দিয়ে পেঁচানো ছিল। এখন গোলাপি বেগম থানা হেফাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে ধারণা করা হচ্ছে, অন্য জায়গায় ওই নারীকে হত্যা করে চকবাউসা গ্রামের ওই ভুট্টাক্ষেতে লাশ ফেলে রাখা হয়। প্রকৃত অজ্ঞাত নারীর লাশ শনাক্ত করা যায়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official

অটোরিকশায় ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, ভিডিও ভাইরাল

banglarmukh official

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের

banglarmukh official

বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশু, ভগ্নিপতি ও শ্বশুর আটক

banglarmukh official