বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ‘ছেলেধরা ও গলাকাটা’ সন্দেহে দুই যুবককে পিটুনি দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। বুধবার নলচিড়া ইউনিয়নের কাণ্ডপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই দুজনকে উদ্ধার করেছে।
ঘটনার শিকার ওই দুই যুবকের নাম তরিকুল ইসলাম (২৯) ও মিজানুর রহমান (২৮)। তাঁরা মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টেকেরহাট চরপ্রসন্নদী জামেয়া আরাবিয়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাহায্যের জন্য টাকা তুলতে তরিকুল ও মিজানুর বুধবার কাণ্ডপাশা গ্রামে যান। এরপর কয়েকটি বাড়ি থেকে টাকা তোলেন। তবে এ সময় গ্রামের কাণ্ডপাশা নুরানী তালীমুল মাদ্রাসার সুপার মাহামুদুল ইসলাম গ্রামের যুবকদের ডেকে জানান, এলাকায় ছেলেধরা ও গলাকাটা প্রবেশ করেছে। এরপর যুবকেরা ওই দুজনকে খুঁজে বের করে পিটুনি দেন।
মাদ্রাসার সুপার মাহামুদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ওই দুজনের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তিনি এলাকাবাসীকে ডেকে আনেন। তবে কেন তাঁর মনে হলো ওই দুজন ছেলেধরা ও গলাকাটা, এমন প্রশ্নের জবাবে সুপার বলেন, এখন এলাকায় এই বিষয়ে আতঙ্ক চলছে বলে ওই দুজনকে তাঁর এমন মনে হয়েছে।
আহত তরিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয়দের আমরা পরিচয়পত্র দেখাই। চাঁদা সংগ্রহের জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্রও দেখাই। তার পরও আমাদের গলাকাটা অপবাদ দিয়ে মারপিট করেছে।’
ওই দুজন বলেন, তাঁদের মারপিটের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মিলন হোসেন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে বেলা দেড়টার দিকে থানা-পুলিশ এসে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার বলেন, জামেয়া আরাবিয়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট থানায় তাঁদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানা ও মাদ্রাসা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দুজনের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গৌরনদীসহ আশপাশের কয়েকটা এলাকায় ছেলেধরা ও গলাকাটার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।