কুমিল্লায় বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ছয়জনসহ আটজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অটোটির চালকও আছেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিন থেকে চারজন।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার জামতলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
একই পরিবারের নিহত ছয়জন হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ঘোড়া ময়দান এলাকার মৃত আবদুর জব্বারের ছেলে জসিম উদ্দিন (৪৫), তার মা সাকিনা বেগম (৭০), স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪০), ছেলে সিপন (২৩), মেয়ে নিপু আক্তার (১৩) ও ছেলে রিপাত (৮)। নিহত অন্যরা হলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক একই উপজেলার করপতি গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন (৩০) এবং একই গ্রামের মা তুম্মির ছেলে শাইমুন হোসেন (১৫)।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন করেন, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে আসা তিশা পরিবহনের একটি বাস লাকসাম যাচ্ছিল। লালমাই উপজেলার জামতলায় আসলে একটি মাইক্রোবাসকে বাঁচাতে গিয়ে লেন পরিবর্তন করতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যায় অটোটির চালকসহ আরও দুইজন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জামালের ভাই কামাল হোসেন জানান, নাঙ্গলকোট উপজেলার ঘোড়া ময়দান এবং করপাতি পাশাপাশি দুটি গ্রাম। জসিম উদ্দিন তার মা, স্ত্রী এবং ছেলে মেয়ে নিয়ে কুমিল্লার গোয়াল পট্টিতে থাকতেন। সেখানে বন্দন নামে একটি খাওয়ার হোটেলের ব্যবসা করতেন। কোরবানির ঈদে সহপরিবারে বাড়িতে আসেন তিনি। এছাড়া ঈদে ছুটি পেয়ে বাড়িতে আসেন হোটেলটির বয় শাইমুন। ছুটি শেষে জামালের অটোতে করে সবাই কুমিল্লা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অটোটিতে থাকা একই পরিবারের ছয় জনসহ আটজন মারা যায়।
কামাল আরও জানান, সহপরিবারে নিহত জসিম বাবা নেই। তারা ছয় ভাই। সবাই পৃথক। জসিম হোটেল ব্যবসার কারণে কুমিল্লায় থাকতেন। বাড়িতে তার ঘরবাড়ি সব আছে। এই দুর্ঘটনায় তার পরিবারে আরও কেউ বেঁচে নেই। জসিমের হোটেল আর সম্পত্তি দেখার কেউ রইল না।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
দুর্ঘটনার পর ওই সড়কটি দিয়ে বেশ কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কটির দুই পাশে অনেক গাড়ি আটকে থাকে। পরে পুলিশ গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত যানগুলো সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।