31 C
Dhaka
এপ্রিল ৩০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ আন্তর্জাতিক জাতীয়

বন্দুক ধরে রোহিঙ্গাদের বিদেশি পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করছে মিয়ানমার

বন্দুকের নলের মুখে রাখাইনের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ‘বিদেশি’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে এক ধরনের পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করছে মিয়ানমার সরকার। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সেদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক একটি মানবাধিকার সংস্থা।

মঙ্গলবার মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটসের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের আচরণের জন্য ইতোমধ্যে বৈশ্বিক নিন্দার মুখে পড়েছে মিয়ানমার। ন্যাশনাল ভ্যারিফিকেশন কার্ডস (এনভিসি) নামের পরিচয়পত্র রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক নিতে বাধ্য করার অভিযোগ সম্বলিত ফর্টিফাই রাইটস গ্রুপের এই প্রতিবেদন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সেই আচরণ নিয়ে আরো উদ্বেগ বাড়াবে।

ফর্টিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘কার্যকরভাবে মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে মিয়ানমার সরকার।’

আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থা বলছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের এনভিসি নিতে বাধ্য করছে; এই পরিচয়পত্র কার্যকরভাবে তাদের ‘বিদেশি’ হিসেবে শনাক্ত করেছে।

ফর্টিফাই রাইটস বলছে, ‘মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করেছে এবং এনভিসি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।’

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার সরকার অধিকাংশ রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে এবং প্রতিবেশি বাংলাদেশ থেকে সেদেশে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী মনে করে রোহিঙ্গাদের। যদিও অনেক রোহিঙ্গা বলেছেন, কয়েক প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে বসবাস করে আসছেন তারা।

দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর বিদ্রোহীদের হামলার পর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কাঠামোগত অভিযান পরিচালনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রক্তাক্ত এই অভিযানের মুখে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসায় আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনায় পড়ে মিয়ানমার সরকার।

তবে বন্দুকের নলের মুখে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যাপারে মন্তব্য পাওয়া যায়নি মিয়ানমারের। দেশটির সরকারের মুখপাত্র জ্য হতেইর সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স।

নির্যাতন কিংবা বন্দুকের নলের মুখে রোহিঙ্গাদের এনভিসি নিতে বাধ্য করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নি। তিনি বলেছেন, ‘এটা সত্য নয় এবং এ বিষয়ে আমার আর কিছুই বলার নেই।

রয়টার্স বলছে, নতুন এই ইস্যু বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছেন, তারা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং নাগরিকত্ব নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরে যাবেন না।

গত বছর জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা রাখাইনে তদন্ত চালানোর পর জানায়, ২০১৭ সালে রাখাইনে যে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, তাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত ‘গণহত্যার অভিপ্রায়ের’ আলামত পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘের এই মিশন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংসহ আরো পাঁচ সেনা জেনারেলকে গুরুতর অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছিল। তবে মিয়ানমার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। যদিও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং গত মাসে বলেছেন, নিরাপত্তাবাহিনীর কিছু সদস্য এই অপরাধে জড়িত থাকতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official