27 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ঢাকা প্রশাসন

পুলিশের শরীরে বসানো বডিওর্ন ক্যামেরায় দোষ কার’ যাচাই হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক:

রাজধানীর সড়কে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশ কিংবা যানচালক কে দোষী, তা পুলিশের শরীরে বসানো (বডিওর্ন) ক্যামেরায় যাচাই হচ্ছে। মামলা দেওয়ার সময় পুলিশ-চালক উভয়ের সচিত্র কথোপকথন রেকর্ড করার নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশের প্রতিটি বিভাগে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের ক্যামেরা সরবরাহ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মফিজ উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যানবাহন চালক ও পথচারীদের প্রায়ই নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর যান চালকদের কেউ কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলছেন। এসব খতিয়ে দেখতেই মামলা প্রদানকারী কর্মকর্তাদের ‘বডিওর্ন’ ক্যামেরা চালু করে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে এই ক্যামেরার ফুটেজ ব্যবহার করা যায়।

ডিএমপির কর্মকর্তারা জানান, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায় বডিওর্ন ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হয়। প্রথম দফায় প্রায় ১০০ ক্যামেরা ব্যবহৃত হলেও রাস্তার অনিয়ম শনাক্তে এই ক্যামেরা তেমন কোনো সুফল নিয়ে আসেনি। চালুর কয়েক মাসের মধ্যেই অনেক ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কর্মকর্তা ক্যামেরা বন্ধ করেই মামলা দিতে থাকেন। আবার অনেকে ক্যামেরার ব্যবহারই ঠিকমতো জানতেন না। নানা পর্যালোচনার পর সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আবারও এই ক্যামেরা ব্যবহারে জোর দেন। এর পর থেকেই ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্টরা আবারও শরীরে ক্যামেরা নিয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘গত ছয় মাসে এ ধরনের একটিমাত্র অভিযোগ পাওয়া গেছে। একজন মোটরসাইকেল চালক হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন। পরে ওই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে বডিওর্ন ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেল, চালকের পেছনে বসা যাত্রীর মাথায় হেলমেট ছিল না। মূলত রাস্তায় এমন ঘটনার চিত্র জানতেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগে ১৬০ জন কর্মকর্তা এই ক্যামেরা ব্যবহার করছেন।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ দক্ষিণের উপকমিশনার এস এম মুরাদ আলী বলেন, ‘এবারের ক্যামেরা অনেক উন্নত। ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পুলিশ যত্নশীল। ইতিমধ্যে তার এলাকার প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা এই ক্যামেরা ব্যবহার করছেন। তবে এখন পর্যন্ত রাস্তায় কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ফুটেজ যাচাইয়েরও প্রয়োজন পড়েনি।

মগবাজার মোড়ে সড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এএসআই কিবরিয়া জানান,বডিওর্ন ক্যামেরা তাদের জন্য নয়। এটি শুধু টিএসআই ও সার্জেন্ট স্যারেরা পড়বেন। তবে সেখানে দায়িত্বরত কোনো সার্জেন্ট বা টিএসআইকে দেখা যায়নি।

ট্রাফিক পুলিশের আরেক সদস্য বলেন, ‘একদিকে পিস্তল, অন্যদিকে মামলার মেশিন রাখতে হয়, ক্যামেরা রাখবে কোথায়? তাই বেশিরভাগ কর্মকর্তাই ওই ক্যামেরা বহন বাড়তি সমস্যা মনে করছেন।’

কাকরাইল মোড়ে গিয়ে পাওয়া যায় ট্রাফিক কনস্টেবল সাঈদকে। তিনি বলেন, ‘এই ক্যামেরার কথা শুনেছি, দেখি নাই।’ দায়িত্বরত এএসআই তৌহিদুল আনোয়ারও বলেন, ‘বডিওর্ন ক্যামেরা কখনো দেখিনি। ব্যবহারের কারণও জানি না। আমাকে শুধু ওয়্যারলেস সেট দিয়েছে, এইটার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারব। তবে রূপসী বাংলা হোটেলের কাছে গেলে সার্জেন্টদের পাবেন। সেখানে গিয়ে দেখেন।’ রূপসী বাংলা মোড়ে গেলে দায়িত্বরত কনস্টেবল প্রদীপ বলেন, ‘এসআই বা সার্জেন্ট ছাড়া এই ক্যামেরা কেউ পান না। এখানে তাদের কেউ নেই।

বাংলামোটরে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট আরিফুর রহমান তার শরীরে লাগানো ক্যামেরা দেখিয়ে বলেন, ‘এই ক্যামেরার সহায়তায় রাস্তার যেকোনো ঘটনার ভিডিও, অডিও ধারণসহ ছবি তুলে অফিসে জমা দেওয়া হয়। তারপর কেউ গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে এই ফুটেজ, অডিও বা ছবির সহায়তায় ঘটনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়।’ তবে এই ক্যামেরার সহায়তায় এখনো কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি বলেও জানান তিনি।

ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মামলার সময় কেউ তর্ক করলে, ট্রাফিক আইন অমান্য করলে, রাস্তায় পার্কিং করলে, মিথ্যা তথ্য দিলে এই ক্যামেরার মাধ্যমে সত্য ঘটনা জানা যাবে। ট্রাফিক পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাস্তায় দায়িত্ব পালনের সময় বেশিরভাগ প্রভাবশালী নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন পুলিশ কর্মকর্তাদের। তারা অনেক সময় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন লোকজনের রেফারেন্স ব্যবহার করে ট্রাফিক পুলিশের ওপর চোটপাট করেন। এজন্য পুলিশের সেফগার্ড হিসেবেই এই ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া আছে।

ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকার চারটি বিভাগে মামলা প্রদানকারী সব ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্টকে বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্যই এই ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

হিজবুত তাহরীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

banglarmukh official

সাংবাদিকরা ভুয়া নিউজ করে আমাদের ১২টা বাজিয়ে দিচ্ছে

banglarmukh official

রমজানে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বরিশাল

banglarmukh official

ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা এখন এক নর্দমা

banglarmukh official

ডেভিল হান্টে গ্রেফতার আরও ৬৭৮

banglarmukh official

ফিল্মি স্টাইলে আদালত চত্বর থেকে আসামি ছিনতাই চেষ্টা

banglarmukh official