ভারতে চিকিৎসা করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা অতুল চন্দ্র হাজরা (৬৫)। বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার আখেড়া গ্রামের বাসিন্দা অতুল চন্দ্র গত ৭ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর হিলি থেকে মালদা জেলার বুনিয়াদপুর পাথরঘাটায় এক আত্মীয় রঞ্জিত মন্ডলের বাড়িতে ওঠেন ওই বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা। সেখান থেকে গতকাল সোমবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটের গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসে ট্রেনে চেপে দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করাতে যাবার কথা ছিল তাঁর। সেইমতো রাতেই মালদা টাউন স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন অতুল চন্দ্র হাজরা, সাথে ছিলেন তাঁর সম্পর্কিত ভাই রঞ্জিত মন্ডল। কিন্তু কুয়াশার কারনে ট্রেন বেশ কিছুক্ষণ দেরি হওয়ার কারণে মালদা রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার পরই অপেক্ষমান যাত্রীদের মধ্যে গাড়িতে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ওই হুড়োহুড়ির মধ্যেই ট্রেনে উঠতে যান অতুল চন্দ্র হাজরা। কিন্তু হাত ফসকে তিনি নীচে পড়ে যান। বড়সড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও তাঁর ডান হাতের কব্জিটি রেলে কাটা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই রাতেই অন্য যাত্রীদের সহায়তায় রঞ্জিত মন্ডল অতুল চন্দ্রকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরপর সেখানে অতুল চন্দ্রের চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন প্রবীণ ওই মুক্তিযোদ্ধা।
রঞ্জিত মন্ডল জানান, ‘দাদাকে নিয়ে আমরা দুইজনে বেঙ্গালুরুতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ট্রেন আসতে দেরী হওয়ার কারণে ভিড়টা বেশি ছিল, আমরা হঠাৎ করেই ট্রেনে চাপতে যাই। সে সময়ই আমার দাদা হাত ফসকে পড়ে যায়। তখনই ডান হাতের চারটি আঙুলসহ কব্জিটি কাটা পড়ে। আমরা এখন মালদা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসা হচ্ছে, তবে অবস্থা খুব একটা ভাল নয়’।
তিনি আরও জানান, ‘আমার দাদা পাসপোর্টেই ভারতে আসে এবং চিকিৎসার জন্যই আমরা বেঙ্গালুরুতে যাচ্ছিলাম। উনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সদস্য। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিমাসে এখন ভাতাও পান দাদা’।