31 C
Dhaka
জুলাই ১৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
বরিশাল

ভোলায় দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশের

জানুয়ারি মাসে মেঘনা, তেঁতুলিয়ায় প্রচুর ইলিশ পাওয়ার কথা থাকলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে। দিনরাত খেটেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। এতে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর ২২ দিন সারা দেশের সব নদ-নদীতে ইলিশ ধরা ও সর্বত্র কেনাবেচা নিষিদ্ধের পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মেঘনা তেঁতুলিয়ায় প্রচুর ইলিশ পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে মিলছে না সে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী তীরের মাছের ঘাটগুলোতে এখন নেই আগের মতো হাঁকডাক। চলছে একরকম সুনসান নীরবতা। শুয়ে বসে দিন কাটাচ্ছেন ঘাটের আড়ৎদার ও শ্রমিকরা। জেলেরা বলছেন ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অসংখ্য খুঁটা মেহেন্দি জাল ও নদীতে চর পরায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। দিনরাত খেটেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে নদীতে গিয়েও জ্বালানি তেলের খরচ উঠছে না। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

একই অবস্থা আড়তদার ও ব্যাপারীদের। ইলিশের সংকট থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা। গুনতে হচ্ছে লোকসান। দাদনের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় তারা । তাই দ্রুত এ সংকট দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় এখন অনেক ট্রলার মালিক ও জেলেকে নদীর পাড়ে ছেড়া জাল বুনন ও ট্রলার মেরামত করতে দেখা গেছে।

ভোলার ইলিশা ঘাট এলাকার জেলে আকতার মাঝি জানান, তিনি শুক্রবার রাতে ২০ লিটার ডিজেল নিয়ে তিনিসহ ৭ জেলে মেঘনায় ইলিশ আহরণে গিয়ে শনিবার মাত্র চার হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন। তেলের দাম ২৩০০ টাকা পরিশোধ করে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে পেয়েছেন। আকতার মাঝি আরও জানান ৪ দিন আগে ২৩০০ টাকার তেল নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে মাত্র ৩০০০ টাকার মাছ পেয়েছিলেন। স্থানীয় কাসেম, আবুল বাশার, হাবিব মাঝির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে একই চিত্র। তারা এখন পেশা পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন।

ইলিশা মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. আবু তাহের, মো. আরিফ,মো. সাহাবুদ্দিন ও আবদুর রহমান বলেন, প্রতি বছর এসময় ইলিশ ঘাটগুলো থাকতো জমজমাট। এখন ব্যবসায়িরা শুয়ে বসে দিন কাটাচ্ছেন। তারা জানান, জেলেদের যে দাদন দেওয়া হয়েছে তা ফেরত পাওয়া নিয়ে তারা শঙ্কায় আছেন। কারণ জেলেরা যে ডিজেল নিয়ে নদীতে যায়। ফিরে এসে যে মাছ পায় তা বিক্রির টাকায় তেলের দাম দিয়ে তারা কখনো ২০০ টাকা কখনো ৩০০ টাকা ভাগে পায়। আবার কখনো তেলের দামও ওঠে না। এ অবস্থায় তাদের থেকে দাদনের টাকা রাখা মানবিক কারণে ও সম্ভব হয় না। আড়তদারদের হিসেব মতে, জেলার দুই লাখ জেলের মধ্যে কমপক্ষে এক লাখ জেলের দাদন নেওয়া আছে এর পরিমাণ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, ইলিশ গভীর পানির মাছ। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অনেক ডুবচর এর সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ইলিশের চলাচলে বাধার সৃষ্টি হওয়ায় ইলিশ এখন এখানে কম আসে তাই জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেনা। এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে মৎস্য অধিদপ্তর। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো খননের আওতায় এনে ইলিশ চলাচলের রুটগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ভোলা জেলার ২ লাখেরও বেশি মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মৎস্য আহরণ করে। প্রতিবছরের এ সময়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিললেও এ বছর তা মিলছে না। দিন দিন এ সমস্যা আরও প্রকট হবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

রমজানে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বরিশাল

banglarmukh official