সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অন্যতম হোতা আবু সালেক। ৩৪ মামলার এই আসামি এক সময় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চাকরি করতেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দাবি। তবে ইসি বলেছে, দুদকের দাবি অসত্য। সালেক কোনো কালেই ইসিতে চাকরি করেননি।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক সাইদুর রহমান আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘দুদকের দাবি অসত্য। তাদের এই দাবির সত্যতা যাচাই করে অনেক আগেই তাদের জানানো হয়েছে। তারপরও তারা কেন বলে বেড়াচ্ছে যে, আবু সালেক ইসিতে কাজ করতেন, বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়ে দুদককে চিঠি দেব। সে জন্য বিষয়টি দু-এক দিনের মধ্যে কমিশনে উত্থাপন করা হবে।’ দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর কারাভোগ করেন টাঙ্গাইলের নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালম।
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৪ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। দুদকের কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম গত ৬ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমকে বলেছেন, আবু সালেক এক সময় এনআইডি প্রকল্পে কাজ করতেন। কীভাবে কার্ড জালিয়াতি করতে হয় তা তিনি সেখান থেকেই শিখেছেন। জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে তিনি ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটান। যে কারণে ব্যাংক কর্মকর্তারা জাহালমকেই চিহ্নিত করেন।
একই সঙ্গে দুদকের অনুসন্ধানেও নিরপরাধ এই ব্যক্তি আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই সালেকের ব্যাপারে দুদক নতুন করে তদন্ত করবে। ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৭ আগস্ট দুদক চার ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিতে দুটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে সই করেন মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মেসবাহ উদ্দিন ও সহকারী পরিচালক সেলিনা আখতার।
যে চার ব্যক্তির তথ্য জানতে চাওয়া হয় তারা হলেন—আবু সালেক, মো. জাহালম, গায়ত্রী রানী বিশ্বাস ও গোলাম মোর্ত্তজা। একই সঙ্গে আবু সালেক ইসি সচিবালয়ে বা ইসির কোনো প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন কি না তা জানতে চাওয়া হয়।
তথ্য যাচাই-বাছাই করে ১৪ আগস্ট দুদকের চিঠির জবাব দেয় ইসি। তা থেকে জানা যায়, আবু সালেকের বাবার নাম মো. আবদুস কুদ্দুস। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার সিংগিয়াতে। জাহালমের বাবার নাম ইউসুফ আলী। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়াতে। গায়ত্রী রানী বিশ্বাসের বাবার নাম কার্তিক চন্দ্র সরকার। তাঁর বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভায়। গোলাম মোর্ত্তজার বাবার নাম ছামাদ মোল্যা।