অনলাইন ডেস্ক:
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে ৩১ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার একই হাসপাতালের ইনজেকশন গ্রহণের পর একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ১৭ রোগী।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার অর্থোপেডিক পুরুষ ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক অসুস্থ ওসব রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা ইনজেকশন গ্রহণের পর রোগীদের খিঁচুনি শুরু হয়। অনেকে বমি করেন। ফলে ওয়ার্ডে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে চিকিৎসকরা এসে অন্য ওষুধ প্রয়োগ করলে সুস্থ হন রোগীরা।
হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওয়ার্ডে মোট ৯৪ জন রোগীর মধ্যে ২৩ রোগীকে হাসপাতালে থেকে সরবরাহকৃত সেফিউরপিম ইনজেকশন (৭৫০ মিলি), অমিটিড ইনজেক্শনসহ (৪০ মিলি) ব্যথানাশক ইনজেক্শন দেয়া হয়। ইনজেকশন দেয়ার পর পরই কুদ্দুস, ইমতিয়াজ, বিকাশ চন্দ্র হাওলাদার, অলিয়ার, এনামুলহকসহ অনেক রোগীর খিঁচুনি শুরু হলে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অর্থোপেডিক ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, সেফিউরপিম ইনজেকশন গ্রহণকারী রোগীদের শরীর কাঁপতে দেখা যায়। বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হলে তারা তাৎক্ষণিক এসে ওষুধ দিলে সুস্থ হন রোগীরা। হাসপাতালের সরবরাহকৃত ওষুধের মেয়াদ রয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু তারপরও কেন এমনটা হয়েছে তা বলতে পারছি না।
ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও সহকারী রেজিস্ট্রার সুদীপ কুমার হালদার বলেন, সেফিউরপিম ইনজেক্শন দেয়া ১৭ জন রোগী সাময়িক সময়ের জন্য অসুস্থ হয়েছিলেন। পরে তারা সুস্থ হন। একত্রে এত সংখ্যক রোগীর খিঁচুনি ও ঘাম দেয়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। একজন রোগী বমিও করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, সোমবার রাতের ঘটনার পর হাসপাতালে চলমান ব্যাচের সেফিউরপিম ইনজেক্শন ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ব্যবহৃত ওষুধের বোতল (ভায়েল) পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্তের জন্য সহকারী পরিচালক ডা. মো.ইউনুস আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটির গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কমিটি।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে ৩১ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায়ও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।