আল আমিন গাজী:
নগরীতে ডাক্তারের লোভের বলি হলো এক অসহায় মায়ের ৫ মাসের শিশু সন্তান রেদোয়ান। জীবন বাঁচানোর জন্য শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধা পর্যন্ত চিকিৎসা পাওয়ার জন্য যায় ডাক্তারের কাছে । আর সেই ডাক্তার যখন থাকে কসাই রুপে তখন তার কাছে সবাই অসহায়।
বরিশালে ডাক্তারদের ক্লিনিক ব্যবসা ও চেম্বারে রোগী দেখা দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে নগরী। একজন ডাক্তারে ৫/৬টি করে রয়েছে রোগী জবাই দেয়ার ক্লিনিক বা ফার্মেসী।
গতকাল শেবাচিম ডাক্তার মাহমুদ হাসান খানের লোভের বলি হলো ৫ মাসের শিশু রেদোয়ান।মৃত শিশুর বাবা আল আমিন হাওলাদার জানান, তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। দিন আনে দিন খায়।কোন রকম স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে নগরীর ২৩নং ওয়ার্ড ১নং সিএনবি পোল দরগাঁবাড়ি এলাকার জীবন যাপন চালিয়ে আসছে।
তিনি আরো জানান, ৫ মাসের শিশু সন্তান রেদোয়ান ঠান্ডা লেগে অসুস্থ্য হয়ে পরে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার সময় তাকে শেবাচিম হাসপাতালের বহিঃবিভাগে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহমুদ হাসান খান চিকিৎসা করে। পরে মাহমুদ হাসান তাকে তার নিজে কসাইখানা নগরীর জেলখানার মোড় বেষ্ট ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে চেম্বারে দেখা করতে বলেন । কিন্তু মৃতর বাবা আল আমিন শেবাচিম হাসপাতালের সামনে একটি ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে পুন:রায় আবার ডাক্তার হাসানকে দেখায়। কিন্তু কসাই ডাক্তার হাসান রেগে গিয়ে রোগী দেখবে না বলে হুমকি দেয় ।
এক পর্যায় আল আমিন তার সন্তানকে বাচাঁতে কসাই ডাক্তার মাহমুদ হাসান খানের বেষ্ট ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনতে রাজি হয়।পরবর্তীতে ডাক্তার হাসান তাকে বিকেলে জেলখানার মোড় বেষ্ট ফার্মেসী তার নিজ চেম্বারে নিয়ে আসতে বলে।
রেদোয়ানের মা শাহনাজ বেগম সন্ধায় তার চেম্বারে আসলে ডাক্তার হাসান তাকে একটি ইনহেলার ওষুধ কিনতে বলে। তিনি ওই ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে ডাক্তারের কাছে দেন।কিন্তু কশাই ডাক্তার হাসান ইনহেলার ওষুধটি শিশু রেদয়ানের মুখে দিলে সাথে সাথে রেদয়ান ছটপট করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।পরবর্তীতে শাহনাজ বেগম রেদয়ানকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনাপর পর পরই অভিযুক্ত ডাক্তার মাহমুদ হাসান খান আত্মগোপনে রয়েছে।এবিষয় তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে নি। অপর দিকে অসহায় মা শাাহনাজ বেগম সন্তানের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে হাজির হয় থানায়। এবিষয় মৃতর পরিবার শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহমুদ হাসান খান, ফার্মেসীর মালিক কানাই মালাকার ও এক কর্মচারিকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছে বলে জানান।
এবিষয় শেবাচিম পরিচালক ডাঃ বাকের তিনি জানায়, সরকারী হাসপাতালে চাকুরী করে কেউ বাধ্যতামূলক কোন রোগীকে তার নিজস্ব ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনতে বলতে পারে না। আর এই সব ডাক্তারদের লোভের জন্যই আজ সাধারন মানুষ স্বজন হারা হচ্ছে। এ বিষয় তিনি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিবে বলে জানান। সেই সাথে তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ও অসহায় সন্তান হারা মা শাহনাজ বেগম কে প্রয়োজনীয় আইনি সহয়াতা প্রধান করার আশ্বাস দেন।
এ ব্যাপারে বেস্ট ফার্মেসীর মালিক কানাই মালাকার জানান, ডাক্তারের দেয়া ব্যবস্থাপনা পত্র দেখে তিনি ওষুধ দেন। সুতরাং তিনি এব্যাপারে কোন দায়ভার নেবেন না। তবে তিনি ঘটনার স্বীকার করে বলেন, ডাক্তার মাহমুদ হাসান খানকে রোগী দেখালে তিনি বাধ্যতামূলক বেস্ট ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনতে বলেন। এক্ষেত্রে ডাক্তার মাহমুদকে কোন পার্সেন্টিস দেয়া হয় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।