নিউজ ডেস্ক:
বরিশালের মুলাদীতে গত এক সপ্তাহে কুকুরের কামড়ে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কুকুরের কামড়ে আহতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলায় ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওষুধ বিক্রেতারা।
জানাগেছে, উপজেলায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং কুকুরগুলো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পথচারীদের কামড়ে দিচ্ছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মুলাদী হাসপাতালে সামনে ৩/৪টি কুকুর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহসহ ৩ জনকে কামড়ে দিয়েছে। একই দিন মুলাদী প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে স্কুলের যাওয়ার সময় রিপা নামের ছাত্রীকে কামড়ে দেয় পাগলা কুকুর। এ ছাড়া কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ব্যবসায়ী শাহজালাল, গৃহবধু নারগিস আক্তার, সুরমা আক্তার, ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, হাসান, ফারুকসহ প্রায় ৩০জন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের শ্রীমতি গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ৮ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহানকে কুকুরে কামড়ায়। ভ্যাকসিন সম্পর্কে ধারণা না থাকায় নুসরাতের পিতা-মাতা স্থানীয় ফকির ও ওঝা থেকে পানি পড়া ও মিঠা পড়া নিয়ে খাওয়ায়। পরবর্তীতে নুসরাত গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে ২৩ ফেব্রুয়ারি মুলাদী হাসপাতালে নিয়ে আসে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথিমধ্যে নুসরাত মারা যায়। এক ওষুধ বিক্রেতা জানান কুকুরে কামড়ানো আহতদের জন্য যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তা ফ্রিজে রাখতে হয়। তাই সব দোকানে এধরণের ভ্যাকসিন রাখা সম্ভব হয় না। এভাবে অব্যহত ভাবে কুকুর মানুষকে কামড়াতে থাকলে উপজেলায় ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিতে পারে।
অপরদিকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কুকুর নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আরও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করেছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে মুলাদী পৌর মেয়র শফিক উজ্জামান রুবেল জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব না হওয়ায় অসুস্থ কুকুরগুলোকে ভ্যাকসিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া কুকুরকে উত্ত্যক্ত না করে সতর্ক ভাবে চলাচলের জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সাইয়েদুর রহমান জানান, কুকুরে কামড়ানো পর যতদ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিতে হবে।