31 C
Dhaka
এপ্রিল ২৯, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আন্তর্জাতিক জাতীয় স্বাস্থ বার্তা

দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার টেস্ট সবচেয়ে কম বাংলাদেশে, মৃত্যুও বেশি

 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসের টেস্টের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। আবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও এ দেশে বেশি।

আজ বুধবার বেলা দুইটা পর্যন্ত পাওয়া উপাত্তে এ অবস্থা দেখা গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দেওয়া তথ্য মিলিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য বিষয়ের বিশ্লেষকেরা বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার জন্যই বাংলাদেশের এই হাল। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, করোনার লক্ষণ আছে, এমন যাকে পাওয়া যায়, তাকেই টেস্ট করা হচ্ছে। আর আক্রান্ত রোগীর অনুপাতে মৃত্যুসংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন। ওই দিন তিন ব্যক্তিতে শনাক্ত করা হয়। ১৮ মার্চ দেশে প্রথম এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে ১ হাজার ১২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় (এখন ১ হাজার ২২১)। মারা গেছেন ৪৬ জন (এখন ৫০)।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৩ হাজার ২২৮ জনের টেস্ট করা হয়েছে বাংলাদেশে, এ তথ্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। ওয়ার্ল্ডোমিটারের সাইটেও এ তথ্য উল্লেখ আছে। আক্রান্তের নিরিখে বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর প্রতি ১০ লাখে এ দেশে টেস্টের সংখ্যা ৮০। প্রতি ১০ লাখে মৃত্যুর সংখ্যা ০ দশমিক ৩ শতাংশ।

ভারতে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৩৮৭। প্রতি ১০ লাখ মানুষে টেস্টের সংখ্যা ১৭৭। আক্রান্তের নিরিখে মৃত্যু হয়েছে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ মানুষের। প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু হয়েছে ০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের।

Lifebuoy Soap
পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৮৮। দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১০৭ জন। প্রতি ১০ লাখে টেস্টের সংখ্যা ৩৩২। আর আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২ শতাংশ। প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু হয়েছে ০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে তুলনামূলকভাবে উন্নত বলে গণ্য করা হয়। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৩, মারা গেছে ৭ জন। এ দেশে ১০ লাখ মানুষে টেস্টের সংখ্যা ২২৩। আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে মৃত্যুর হার ৩ শতাংশের খানিকটা বেশি।

এই ভয়াবহ ভাইরাস হিমালয়–কন্যা নেপালকে পর্যুদস্ত করতে পারেনি তেমন। দেশটিতে আক্রান্তের পরিমাণ ১৬। প্রাণহানির কোনো ঘটনা এখনো ঘটেনি। ১০ লাখ মানুষে টেস্টের সংখ্যা ২১৬।

সাড়ে সাত লাখ মানুষের ছোট দেশ ভুটানে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ। এ দেশেও কোনো মৃত্যু নেই করোনায়। আর ১০ লাখে টেস্টের সংখ্যা ১ হাজার ৫১১।
শত শত দ্বীপের দেশ মালদ্বীপে আক্রান্ত হয়েছে ২১ জন। মাত্র প্রায় চার লাখ মানুষের এ দেশেও কোনো মৃত্যু নেই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে টেস্টের এ সংখ্যা সর্বোচ্চ, প্রতি ১০ লাখের হিসাবে ৫ হাজার ৩৬৩।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে আফগানিস্তানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭১৪। মারা গেছে ২৩ জন। তবে এ দেশের টেস্টের সংখ্যা ওয়ার্ল্ডোমিটারে নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম মনে করেন, টেস্ট না হওয়ার বিষয়ে টেস্ট করার ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবে হয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা বেশি হওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সংকট। ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলামের কথা, দুটি ক্ষেত্রেই সংকটের একটি অভিন্ন কারণ আছে। আর তা হলো, সমন্বয়হীনতা। লোকবলের সমন্বয়হীনতা ও সুযোগ–সুবিধার সমন্বয়হীনতা—দুই–ই আছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনার বক্তব্য অবশ্য ভিন্ন। সেব্রিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনা আছে, এমন সন্দেহ করা (সাসপেকটেড কেস) যত ব্যক্তি পাওয়া যায়, তাদের সবারই নমুনা এনে পরীক্ষা করি। কেস বেশি হলে টেস্ট বেশি হবে, কম হলে কম হবে। আমাদের কেসের সংজ্ঞায় যারা পড়ে, তাদেরই টেস্ট করি। আগে যেমন আমরা নির্দিষ্ট করেছিলাম যে বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিদের টেস্ট করা হবে। এখন এভাবে নির্দিষ্ট করে করা হচ্ছে না। কারও ভেতর লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলেই আমরা টেস্ট করছি।’

মৃত্যুর বিষয়ে সেব্রিনার বক্তব্য, ‘এ নিয়ে মন্তব্য করা খুব বেশি আগাম বলা হয়ে যাবে (টু আরলি টু কমেন্ট)। অন্য অনেক দেশের চেয়ে আমাদের এ সংখ্যা কম। তবে রেট কম হলেও একটি মৃত্যুও কাম্য না। যদিও প্রতিটি কেস বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে মৃত্যুর তুলনামূলক হার কমে আসছে। শুরুতে মৃত্যুর সংখ্যা আক্রান্তের সংখ্যার ১০ শতাংশ ছিল। সেখান থেকে কমে এখন প্রায় ৫ শতাশের কাছে আছে। এ বিষয় নিয়ে এখন খুব বেশি আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করা হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে মৃতদেহের নমুনা নিয়েও পরীক্ষা করা হয়েছে। আর এর কারণেও অন্য দেশগুলোর তুলনায় মৃত্যু বেশি বলে জানান মীরজাদী।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official