নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে কোভিড (১৯) প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এবং নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধকরণের প্রতিদিনের ন্যয় কার্যক্রমের অংশ হিসাবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমানের নির্দেশে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীর রুপাতলী এলাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হয়।
এসময় মোবাইলকোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়ীত্বরত সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় অবহেলা ও সামাজিক দূরত্ব বিষয়ক সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে যাত্রী বহনকারী ঢাকাগামী দুইটি মাইক্রোবাস এবং একটি পিকআপ ট্রাক আটক করেন। একটি মাইক্রো বাসে দুই পরিবারের ১৪ জন এবং আরেকটি মাইক্রোবাস দশ পরিবারের মোট ১২ জন যাত্রী গাদাগাদি করে ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল ত্যাগের প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলেন।
প্রথম মাইক্রোবাসে দুই পরিবারের দুই কর্তা এবং চালক ও তার সহযোগী প্রত্যেককে করোনা নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারা মোতাবেক এক হাজার টাকা করে মোট চার হাজার টাকাসহ দ্বিতীয় মাইক্রোবাসের দশজনকে একই আইনে এক হাজার টাকা করে দশ হাজার টাকা এবং পিকআপ ট্রাকের চালককে একই আইনে এক হাজার টাকাসহ সর্বমোট পনের হাজার টাকা টাকা অর্থে দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
পাশাপাশি প্রাণসংহারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সর্বাবস্থায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে সচেতনতামূলক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। একই সময়ে রুপাতলী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় জনসমাগম রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অপরদিকে নগরীর সদর রোড, নথুল্লাবাদ, চৌমাথা ও কাশীপুর, সাগরদী এলাকায় মোবাইল কোর্টের পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। এ সময় তিনি বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি সবাইকে নির্দিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে এবং এ আদেশ অমান্যাকরীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
এসময় সাগরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপ্রয়োজনে দোকান খোলা রাখার অপরাধে সংক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৪ ধারা অনুযায়ী শিকদার হার্ডওয়ার এর কর্মচারী আমিন কে ৫ হাজার টাকা, জাহিদ ট্রেডার্স এর মালিক মোঃ জাহিদুল ইসলাম কে ৩ হাজার এবং মা হার্ডওয়ার এর মালিক মোঃ শাহাদাত কে ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
পরে চৌমাথা বাজার এলাকায় দুটি পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানে যাত্রী পরিবহন করার দায়ে সংক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৪ ধারা অনুযায়ী দুই চালক মোঃ রেজাউল কে ৪৫০০ টাকা এবং মোঃ মন্টু কে ৪ হাজার টাকা জরিমানা, পাশাপাশি ২১ যাত্রী কে চারশত টাকা করে মোট ৮ হাজার ৪০০ টাকাসহ মোট ২৮ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে সহযোগিতা করেন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন এবং এসআই রফিকুল ইসলাম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করে মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।
অভিযান চলাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট বলেন, বরিশাল নগরী ও জেলার জনস্বার্থে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে সকলকে মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।