আসন্ন পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার কঠোর মনিটরিংয়ে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে নিয়মিত মাঠে থাকবেন ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রমজান মাসজুড়ে পরিচালনা করা হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার থেকেই শুরু হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রথম দিনে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এবং খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন দোকান ও আড়তে অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযোগ আছে, রমজান আসলেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। উর্ধ্বমুখী হয় চাল, ছোলা, তেল, চিনি, চিড়া, রসুন, পিয়াজ, আদা, ডালসহ নানা পণ্যের মূল্য। তবে ব্যবসায়ীদের এ সংকট ঠেকাতে জেলা প্রশাসন প্রতিদিন নগরজুড়ে পরিচালনা করবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ম্যাজিস্ট্রেটের দুটি টিম বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালাবেন। এ জন্য ছয়জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা প্রশাসনের ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) নিজ নিজ এলাকায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে রমজান মাসজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলবে। আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। রমজানের আগ পর্যন্ত বিশেষ ভাবে পাইকারি বাজার কঠোর মনিটরিং করে সতর্ক করা হবে। তবে রমজান শুরুর পর কোনো অসঙ্গতি দেখলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রবণতা হলো রমজান আসলেই অযাচিতভাবে পণ্যের দাম বাড়ানো। এটি মোটেই কাম্য নয়। ব্যবসায়ীদের বলব, রমজানে পণ্যের অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবেন না। করলে আইনগত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ক্যাব চট্টগ্রামের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু সাময়িক এ অভিযানে কতটুকু সুফল মিলবে সে প্রশ্নও থেকে যায়। কারণ যে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে বাজার অস্থির হয়, সে চক্রকে সাময়িক অভিযান দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি। এর জন্য দরকার পরিকল্পনা মাফিক ধারাবাহিক উদ্যোগ।’
খাতুনগঞ্জে অভিযান পরিচালনাকারী কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিনের অভিযানে ব্যবসায়ী সমিতি ও দোকান মালিকদেরকে যথাযথভাবে ক্রয়-বিক্রয় মূল্যতালিকা প্রদর্শন এবং রশিদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযানে মূল্য তালিকা না থাকায় একটি ছোলাবুট ও ডালের পাইকারি দোকানকে দুইহাজার টাকা জরিমানা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সংরক্ষণের দায়ে একটি খেজুরের আড়তকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
রিয়াজউদ্দিন বাজারে অভিযান পরিচালনাকারী সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘অভিযানে একটি মুদি দোকান ও একটি মুরগীর দোকানকে মূল্য তালিকা অনুযায়ী পণ্য বিক্রি না করায় পৃথক দুই মামলায় ১৮ হাজার টাকা জরিমানা এবং মূল্য তালিকা না থাকায় কাঁচাবাজারের একটি দোকানকে দুইহাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’