ন্টারনেট প্রটোকলভিত্তিক টেলিভিশন (আইপিটিভি) সেবা প্রদানে ২৪ প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তবে নীতিমালা ছাড়াই আইপিটিভির এ অনুমোদনে তৈরি হয়েছে জটিলতা। কারণ বিদ্যমান আইন ও নীতিমালায় সম্প্রচারসংক্রান্ত সব ধরনের অনুমোদন দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়।
বিটিআরসির অনুমোদন দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে লিংক থ্রি টেকনোলজিস, আইসিসি কমিউনিকেশন, ডিজি-জাদু ব্রডব্যান্ড, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো), কেএস নেটওয়ার্ক, এনরিচ নেট, প্রিজমা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক, চিটাগং অনলাইন, ওয়ান স্কাই, অন্তরঙ্গ ডটকম, ট্রায়াঙ্গল সার্ভিসেস, মাজেদা নেটওয়ার্কস, আম্বার আইটি, বিডিকম অনলাইন, এনএমএস টেকনোলজিস, বিজয় অনলাইন, ইরটেল সার্ভিসেস, ঢাকা ফাইবার নেট, নেক্সট অনলাইন, ভিশন টেকনোলজিস, ট্রাইক্যাচ টেকনোলজি, কসমোপলিটন কমিউনিকেশনস, উইঙ্ক কমিউনিকেশন ও আইটি বেজ।
জানা গেছে, অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর এরই মধ্যে সেবাটি চালু করেছে বিডিকম অনলাইন। এছাড়া চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ডোমেস্টিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটির (ডিএনসিসি) বৈঠকে আইপিভিত্তিক সব ধরনের ডাটাসেবা ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ডাটা সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্ট্রিমিং সার্ভিস, আইপিটিভি, ভিডিও অন ডিমান্ড ইত্যাদি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ ধরনের সেবা প্রদান করবে আইএসপিগুলো।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে, ডিএনসিসির বৈঠকে আইপিটিভির অনুমোদনের ক্ষমতা বিটিআরসিকে দেয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আবেদন আহ্বানের পর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে বিটিআরসি। আইপিটিভি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ডাউনলিঙ্কের অনুমতিপ্রাপ্ত দেশী-বিদেশী টিভি চ্যানেলের কনটেন্ট প্রচার করতে পারবে। তবে প্রতিটি চ্যানেল বা প্রোগ্রাম কিংবা কনটেন্ট প্রচারে প্রয়োজনীয় চুক্তি বা অনুমোদন অথবা ছাড়পত্র নিতে হবে। অনুমোদিত চ্যানেল ছাড়া অন্য কোনো চ্যানেল বা কনটেন্ট প্রচার করা যাবে না। টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী বিটিআরসি থেকে ট্যারিফ অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ব্যবহারকারীর আইপি লগ ন্যূনতম ৯০ দিন বা তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে আইপিটিভি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সব ধরনের স্ট্রিমিং সার্ভিস প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বণিক বার্তাকে বলেন, বিটিআরসির কাছে জানতে চেয়েছি। তারা অস্বীকার করেছে। আইপিটিভির লাইসেন্স দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে তারা। এখনো আইপিটিভি নিয়ে কোনো নীতি হয়নি, তাই এ মুহূর্তে লাইসেন্স দেয়া যাবে না।
তবে ডিএনসিসির বৈঠকে সব ধরনের ডাটা কমিউনিকেশনস নেটওয়ার্ক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হলেও এজন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংশোধনসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বণিক বার্তাকে বলেন, সেবাটি দেয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। এখনো এ ধরনের কোনো নীতিমালা নেই। সম্প্রচারের লাইসেন্স দেয়া হয় মূলত তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে বিটিআরসি দেশে আইপিটিভি ও ভিডিও অন ডিমান্ড সেবা দুটি বন্ধ করে দেয়। গত বছর ডিসেম্বরে সেবা দুটি আবার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ইন্টারনেটভিত্তিক এ ভিডিও সম্প্রচার প্রযুক্তি ওয়েব টিভি নামেও পরিচিত। বিশ্বে আইপিটিভি বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চালু হয় ১৯৯৯ সালে, কানাডায়।