27 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
প্রচ্ছদ বরিশাল

বরিশালের প্যাডেল স্টিমারে যাত্রী বেশি চাঁদপুর ও কাউখালীর

জিয়াউল হক ঢাকার বেসরকারি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন পিরোজপুরে। বিলাসবহুল ও আরামদায়ক হওয়ায় নদীপথেই ছিলো বাড়ির ফেরার এই যাত্রা। তবে এবারে আর ব্যক্তি মালিকাণাধীন লঞ্চে নয়, নৌযানটি ছিলো বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) প্যাডেলচালিত স্টিমার পিএস টার্ন-এ।

শুক্রবার (৩১ মে) সকালে বরিশাল নদী বন্দরে নেমে বেশ উচ্ছ্বসিত সুরে বললেন, ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা প্যাডেলচালিত স্টিমারে সখের বসে দুই বন্ধু মিলে এসেছি। যাত্রাটি বেশ ভালোই ছিলো, গতিও খারাপ নয়।

চাঁদপুরসহ মাঝপথে বিভিন্ন জায়গাতে ঘাট দেওয়াটা অনেকটাই অ্যাডভেঞ্চারে বের হওয়ার মতো মনে হয়েছে। যেমন বরিশাল নদী বন্দরে প্রায় ২ ঘণ্টার যাত্রা বিরতি দেওয়ায় আশপাশে ঘুরে দেখা গেছে। তবে স্টিমারে বসে যাত্রীদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিলো ভেতরের জায়গাটা অপ্রতুল। আর জায়গা কম থাকার কারণেই পিরোজপুরের কাউখালীর বাসিন্দা ও স্টিমারের যাত্রী সাবিনা আক্তারকে স্টিমারের সামনের সরু জায়গায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আসতে হয়েছে।

সাবিনা আক্তার বলেন, কাউখালি-তুষখালী রুটে খুব অল্প পরিসরে লঞ্চ চলাচল করে। তবে স্টিমারের যাত্রাটা নিরাপদ মনে করে এতেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চেপে বসেছেন। জায়গা সরু হওয়ায় চাপাচাপি হলেও গরমের সময় হওয়ায় সামনে আসতে পেরে বেশ আরামই হয়েছে।প্যাডেল স্টিমারে যাত্রী বেশি চাঁদপুর ও কাউখালীর।

এদিকে স্টিমারে খাওয়া-দাওয়ার মান বেসরকারি অনেক লঞ্চের থেকে ভালো বলে দাবি করেছেন বরিশালের যাত্রী শিপন। প্যাডেলস্টিমারে যাত্রীর কোনো সংকট দেখা যায়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রীসেবার সবকিছু ঠিক থাকলেও স্টিমারের কেবিনগুলোতে একটু সমস্যা রয়েছে। বেসরকারি লঞ্চের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে হলে যেগুলোর একটু আধুনিকায় প্রয়োজন। যেমন নন এসি কেবিনগুলোতে প্রচুর গরম থাকে যা নিরসনের উপায় খুজে বের করা প্রয়োজন।

তবে স্টিমারের দায়িত্বে থাকা স্টাফরা বলছেন, বরিশাল থেকে ঢাকা নৌরুটে স্টিমারে যা যাত্রী হয় তার বেশিরভাগই চাঁদপুরের। আর ঢাকা থেকে বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ রুটে যে যাত্রী হয় তার বেশিরভাগই পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন ঘাটের। এরমধ্যে ডেকের যাত্রীই বেশি। আর ঈদের সময়ে প্যাডেলচালিত স্টিমারের যাত্রী স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। কারণ তখন মানুষের চাপও বেশি থাকে। তবে স্বাভাবিক সময়ে স্টিমারের ডেকের পাশাপাশি কেবিনও খালি থাকে। যদিও এর কারণ হিসেবে স্টিমার বা সরকারি যাত্রীবাহী নৌযানগুলো চলাচলের সময়কে দায়ী করছেন অনেকে।

যাত্রীদের মতে, বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে রাত ৯টার পর নদীবন্দর ত্যাগ করে। আর সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সরকারি জাহাজগুলো বরিশাল বা ঢাকার ঘাট ত্যাগ করে। এতো আগে কোনো যাত্রীই স্টিমারে উঠতে চায় না। যান্ত্রিক ত্রুটির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ঘাট দিতে দিতে অনেক সময় গন্তব্যে যেতে দেরি করে স্টিমারগুলো। যেখানে বেসরকারি লঞ্চে এই সমস্যা তেমন একটা নেই বললেই চলে।

আবার যেখানে বেসরকারি লঞ্চ কোম্পানিগুলো বরিশাল-ঢাকা রুটে যাত্রীদের বিলাসবহুল এসি/ননএসি কেবিন বানিয়েও ৯ শত থেকে ১ হাজার টাকায় সিঙ্গেল কেবিন ও ১৮ শত থেকে ২ হাজার টাকায় ডাবল কেবিন যাত্রীদের দিচ্ছে। সেখানে সরকারি নৌযানে ১ হাজার টাকার এসি কেবিনের সঙ্গে আবার ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হচ্ছে যাত্রীদেরই। ফলে বাড়তি টাকা কেউই দিতে চায় না। ডেকের ভাড়া ২৫০ টাকা স্টিমারে নির্ধারিত থাকলেও লঞ্চে দেড়শ টাকায়ও সাধারণ সময়ে ডেকে যাতায়াত করা সম্ভব।

এক কথায় বেসরকারি লঞ্চগুলো যাত্রীদের টানতে যেখানে নানান অফার দিচ্ছে সেখানে সরকারি জাহাজের সেবা তাদের নিয়মের বাইরে যাচ্ছে না।প্যাডেল স্টিমারে যাত্রী বেশি চাঁদপুর ও কাউখালীর। এদিকে তথ্যানুযায়ী বিআইডব্লিউটিসির নৌ-সেবার ৩০ মে থেকে স্পেশাল সার্ভিস শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩১ মে) ভোরে বরিশাল নদী বন্দরের বিআইডব্লিউটিসির নির্ধারিত পল্টুনে গিয়ে দেখা গেলো প্যাডেলচালিত পিএস টার্ন নোঙর করা রয়েছে। পরবর্তী স্টেশনের যাত্রীরা স্টিমারের ভেতরে বসে রয়েছেন। অনেকে পল্টুনে ঘোরাঘুরি করছে। আর যারা বরিশালে নামছেন তাদের ঘাট থেকে বের হতে হতে টিকিট দেখাতে হচ্ছে, যদিও এটা সবার জন্য প্রযোজ্য নয়।

অপরদিকে স্পেশাল সার্ভিসের সময় পণ্য পরিবহন না করলেও পিএস টার্ন থেকে কিছু ফার্নিচার নামানো হচ্ছে। পরবর্তীতে সকাল ৬টায় যাত্রীদের নিয়ে স্টিমারটি মোড়লগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ বলেন, যাত্রীদের নিরাপদে ও নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিআইডব্লিউটিসির সব প্রস্তুতি আগে থেকেই সম্পন্ন করে রেখেছে। স্টিমার সার্ভিসে ঈদে বাড়ি ফেরা এবং ঈদের পরে কর্মস্থলে যাওয়া যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারবেন। আর স্পেশাল সার্ভিসের কেবিনের টিকিট ঢাকা কার্যালয় থেকে সরাসরি দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে।

১৯৩৮ সালের পিএস মাহসুদ, ১৯৫০ সালে পিএস টার্ন ও লেপচা এবারের ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের যাত্রীসেবায় নিয়োজিত রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official