স্টাফ রিপোর্টার//রেজুয়ানুর রহমান সফেন :
মে মাসজুড়ে কালবৈশাখী-দাবদাহ-শিলাবৃষ্টি-বন্যা
গোটা বিশ্ব করোনার অদৃশ্য থাবায় বিপর্যস্ত। গতির বিশ্বে ভয়ঙ্কর স্থবিরতা। যেখানে মানুষ একটু অবসরের জন্যে কত কিছুই না করে, সেখানে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি। বাংলাদেশেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। গত কয়েক শতাব্দীর মধ্যেই এটাই সবচেয়ে বড় মহামারি।
আর এরই মধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে দেশে চলতি মে মাসে ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, তীব্র দাবদাহ ও বন্যার সম্ভাবনার কথা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চলতি মাসের জন্য সোমবার (০৪ মে) দেয়া পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে কমপক্ষে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে একটি অন্তত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এ মাসে দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত ২-৩টি মাঝারি অথবা তীব্র ঝড় (কালবৈশাখী) এবং দেশের অন্যত্র ৩-৪টি হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
মে মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং অন্যত্র ১-২টি মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি) অথবা মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কতিপয় স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এপ্রিলে দেশে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে রাজধানীতে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি হয়েছে।
এদিকে আন্দামান সাগরের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’র ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দেয়া হয়নি। লঘুচাপটি সৃষ্টির স্থানটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে। এর প্রভাব এখনো বঙ্গোপসাগরে আসেনি। প্রভাব না থাকলে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কোনো পূর্বাভাস ও বিশ্লেষণ দেয়া হয় না।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সোমবার দেয়া এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে আরও সপ্তাহখানেক লেগে যাবে। এরই মধ্যে আন্দামান সাগরের কাছে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় হয়ে ১২ থেকে ১৪ মে’র মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশেও এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। লঘুচাপটি সৃষ্টির স্থানটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে। এর প্রভাব এখনো বঙ্গোপসাগরে আসেনি। প্রভাব না থাকলে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কোনো পূর্বাভাস ও বিশ্লেষণ দেয়া হয় না। তাই আন্দামান সাগরের ওই লঘুচাপ নিয়ে তারা কোনো বিশ্লেষণ দেয়নি।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে জানান, আন্দামান সাগরের লঘুচাপটি এখনো অপরিণত অবস্থায় আছে। সেটি আদৌ আরও শক্তি অর্জন করে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কি না, এ নিয়েই অনিশ্চয়তা রয়েছে। তা হলেও বাংলাদেশের ওপর আদৌ এর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এটিও নিশ্চিত নয়। তাই আমরা এ ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দিচ্ছি না।