27 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয়

সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে খুলছে ‘জট’

মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয় ২০১২ সালে। ভারতের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি হয় ২০১৪ সালে। ফলে বঙ্গোপসাগরের প্রায় এক লাখ ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের। কিন্তু বিরোধ নিষ্পত্তির সাত বছর পার হলেও সমুদ্র সম্পদ আহরণে উল্লেখযোগ্য সফলতা এখনও অর্জিত হয়নি।

দেশের সমুদ্রসীমার মধ্যে সামুদ্রিক সম্পদ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য ২-ডি নন-এক্সক্লুসিভ মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভের উদ্যোগ নেয়া হলে সেটাও জটিলতায় আটকে যায়। অবশেষে সে জটিলতার জট খুলেছে। নরওয়ে-ভিত্তিক সিসমিক সার্ভে প্রতিষ্ঠান ‘টিজিএস-স্কাল্মবার্জার জেভি’-কে (TGS-Schlumberger JV) এ কাজ সম্পন্নের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় ২-ডি নন-এক্সক্লুসিভ মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে পরিচালনার জন্য পুনঃদরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিডে সর্বোচ্চ মূল্যায়িত বিডার ‘টিজিএস-স্কাল্মবার্জার জেভি’র সঙ্গে পেট্রোবাংলার চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

bay-of-bengal-02

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের সমুদ্র অঞ্চলের অগভীর অংশের পশ্চিম ভাগে এবং সম্পূর্ণ গভীর সমুদ্র এলাকায় সিসমিক অনুসন্ধান উপাত্তের অভাব থাকায় ওই সব এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহ অনাগ্রহী হওয়ায় ২-ডি নন-এক্সক্লুসিভ মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভ পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সাগর তলদেশের জ্বালানি সম্পদ সম্পর্কে উচ্চমানের ডাটা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। আগামীতে অর্জিত সমুদ্রাঞ্চলে বিডিং রাউন্ডে অংশগ্রহণেচ্ছুক আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহ বিডিংয়ের পূর্বেই এই ডাটা ক্রয়ের মাধ্যমে বিডভুক্ত এলাকার সিসমিক তথ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।

সূত্র জানায়, মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে সার্ভের যাবতীয় ব্যয় সার্ভে পরিচালনাকারী কোম্পানি নিজেরাই বহন করে এবং এতে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। তবে সার্ভের প্রাপ্ত ডাটা ব্যবহার করে কোম্পানিটি লাভবান হয়। ডাটাগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারে সংশ্লিষ্ট ওই কোম্পানি।

bay-of-bengal-03

মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে পরিচালনার জন্য ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফা আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। কিন্তু আন্তর্জাতিক দরপত্রে তেমন সাড়া না পাওয়ায় পরবর্তীতে একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যোগ্যদের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের অনুমোদনের জন্য ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। ওই বৈঠকে দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অধিকতর পর্যালোচনায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কাজের জন্য বিড মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন যথানিয়মে সম্পাদিত হয়েছে। আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির মতামতের ভিত্তিতে ২-ডি নন-এক্সক্লুসিভ মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে পরিচালনার জন্য পেট্রোবাংলা কর্তৃক আহ্বান করা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রে সর্বোচ্চ মূল্যায়িত বিডার টিজিএস-স্কাল্মবার্জার জেভি’র সঙ্গে অনুমোদিত এগ্রিমেন্টের আলোকে চুক্তি স্বাক্ষরের কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন চাওয়া হয়। গত ২৪ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয় কমিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির গত বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

bay-of-bengal-04

তিনি বলেন, এ সার্ভের মাধ্যমে শুধু তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান হবে, এমনটি নয়। এর মাধ্যমে সমুদ্রের নিচে জিও কন্ডিশন কেমন, মাটির কন্ডিশন, মাটির নিচে কী কী আছে, আসলে এ এলাকায় পরবর্তীতে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করা যাবে কিনা- এসব তথ্য জানা যাবে।

নাসিমা বেগম আরও বলেন, আমদের কাছে খুব কম ডাটা আছে। এক্ষেত্রে আরও ডাটা দরকার। কারণ, অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে তাদের ইচ্ছা থাকার পরও বাংলাদেশে আসতে পারে না। কারণ মাটির নিচে কী আছে তা জানা নেই। বিনিয়োগকারীরা আগে জানতে চাইবে, মাটির নিচে কী আছে?

তিনি বলেন, তারা (নিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠান) আমাদেরকে ডাটা দেবে। কোম্পানিটি নিজেদের খরচেই সার্ভে চালাবে। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো খরচ নেই। ওই ডাটা তারাও হয়ত ব্যবহার করবে, আমরাও ব্যবহার করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official