শিশু মাসুদ মিয়ার এক সেট মাত্র জামা-প্যান্ট। তাও সেইগুলো বিদ্যালয়ের ব্যবহারের পোশাক। বাড়ি কিংবা বিদ্যালয়ে একই পোশাক পড়ে রাতদিন কাটাতে হয় তাকে। মা-বাবার অনুমতিতে এবার তাই বাড়ির রাজহাঁস বেঁচে ঈদের নতুন জামা কিনবে মাসুদ। প্রয়োজন ও ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে বাজারে আশা ভরা মন নিয়ে সে এসেছে হাঁস বেঁচতে।
দরিদ্র পরিবারের শিশু মাসুদের দেখা মেলে নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার গাংধরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পাঁচকাঠা বাজারে। বিদ্যালয়ের পোশাক পড়া দেখে আগ্রহ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানা যায় হাঁস বেঁচতে আসার মূল উদ্দেশ্য।
মাসুদ উপজেলার সন্ধ্যাওয়ালা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আলফত আলীর ছেলে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাসুদ তার বাড়ির পথ মাড়িয়ে ও কংস নদী পাড়ি দিয়ে টাকার জন্য রাজহাঁস বেঁচতে এসেছে।
মাসুদের সঙ্গে কথা বলার ঘণ্টাখানেক পর বাজারে এলেন তার দাদা মঙ্গল আলী। তিনি বলেন, ‘ছোট মানুষ খুব বায়না ধরেছে এবারের ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনে দিতেই হবে। আর অন্য কোনো কাপড়চোপড় না থাকায় এক কাপড় পড়েই চলাচল করতে হয় মাসুদের। টানাপোড়েনের সংসার আর তাছাড়া পরিবারের কারো হাতেই ঈদ করার মতো টাকাপয়সা নেই। শেষে উপায়ন্তর না দেখে বায়না মিটাতে রাজহাঁসটি বেঁচে দিতে বলে আমার ছেলে আলফত (মাসুদের বাবা)।
সেই নির্দেশ পেয়ে কারো অপেক্ষা না করেই রাজহাঁস নিয়ে মাসুদ দৌঁড়ে বাজারে এসে পড়েছে। হাঁস বেঁচা হলে সেই টাকা দিয়ে ঈদের নতুন জামা-প্যান্ট কিনবে মাসুদ। তবে কাঙ্ক্ষিত দামে যদি বেঁচা না হয় হাঁসটি তাহলে জামা-প্যান্ট কি কেনা হবে না তার? প্রতিবারের মতো এবারের ঈদও কি যাবে তার বিবর্ণ?